শিরোনাম

South east bank ad

দেড় বছর কারাবন্ধী বরগুনার সাংবাদিক মীর জামাল

 প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :

ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় টানা দেড় বছর ধরে কারাগারে আছেন বরগুনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দ্বীপাঞ্চল পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ও বাংলানিউজের বরগুনা প্রতিনিধি মীর জামাল।

নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে চেষ্টা করেও জামিন মেলেনি তার। পরিবারের বড় সন্তানকে জামিন করাতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটছে জামালের বাবা-মায়ের।

দীর্ঘদিন বাবার স্নেহ থেকে বঞ্চিত সাংবাদিক জামালের কন্যা পুষ্টির অভাবে এখন নানান রোগে আক্রান্ত। অসহায় মীর জামালের পাশে দাঁড়াতে সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপ চান স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিকরা।

সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কখনো হাউ-মাউ করে, আবার কখনো নিরবে চোখের পানি ফেলে সন্তানকে কাছে পাবার আকুতি করতে থাকে সাংবাদিক মীর জামালের মা।

গত বছরের ৬ মে লামিয়া নামে এক নারীর দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক মীর
জামাল ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রতিনিধি সুমন সিকদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিছুদিন পরে সুমন সিকদারসহ ৫ জনের জামিন হলেও দেড় বছর ধরে কারাগারেই আটক আছেন জামাল।

জামালকে জামিনে বের করতে নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালতে একাধীকবার আবেদন করেও কারাগার
থেকে মুক্ত করার ব্যর্থ চেষ্টায় সর্বস্ব হারিয়েছে তার পরিবার।

মীর জামালের মা মোসা: রুনু বেগম বলেন- দেড় বছর ধরে বড় ছেলে মীর জামাল কারাবন্ধী। দিনের পর দিন অপেক্ষা করি ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে একটু কান্না করবো। কিন্তু ছেলেকে কাছে পাইনি। করোনার জন্য কারাগারে দেখাও করতে দেয়নি। ছেলে জীবিত অথচ দেড় বছর আমি দেখতে পারিনি। আমি মনে হয় আমার ছেলেকে দেখে মরতে পারবো না।

মীর জামালের বাবা মো. জালাল মীর বলেন- ছেলের জামিন করাতে গিয়ে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। টাকা শেষ হবার পরে জমি বিক্রি করেও ছেলেকে জামিনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা ব্যর্থ। এখন আমাদের তিন বেলা খাবার জোটেনা।

তিনি আরো বলেন- জামালের মা অসুস্থ্য, একটা ওষুধ কিনে দেবার সামর্থ্যও নেই আমার। কিছু দিন আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলো ওর মা। কিন্তু একটা স্যালাইন কিনেও দিতে পারিনি।

সাংবাদিক মীর জামালের ছোট ভাই কামাল মীর বলেন- ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করতেন তিনি। ভাইয়ের জামিনের জন্য আদালতের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে চাকরিটাও হারিয়েছেন।

অন্যদিকে, মীর জামালের স্ত্রী লিমা বেগম তার কন্যা শিশু তাহিয়া নূর জামালকে নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।

লিমা বেগম বলেন- পুষ্টিকর খাবারের অভাবে অনেকটাই মানসিক ভারসাম্যহীন শিশু তাহিয়া নূর। বঞ্চিত হয়েছে বাবার ভালোবাসা থেকে। মেয়েটার পায়ে একটু সমস্যা
মনে হচ্ছে। কিন্তু ডাক্তার দেখাতেও পারছে না। স্বামী জামালপুরের পরিবারের মতোই বাবার বাড়ির অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। এমন অবস্থায় মেয়ের চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো সম্ভব নয়।

বরগুনার প্রবীণ সাংবাদিক ও বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাসান ঝন্টু বলেন- সাংবাদিক মীর জামাল বরগুনায় সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের প্রচার, হত-দরিদ্র মানুষের মিডিয়া সহায়তা এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস/দপ্তরের অনিয়ম দুর্নীতি প্রচার/প্রকাশে অসংখ্য রিপোর্ট করেছে।

জামাল সকল চোর-বাটপারদের চোখের শুল হয়েছিলো। এসব চোরদের সাথে হাতমিলেয়ে কিছু সাংবাদিকদের যোগসাজশে শুরু হয় সাংবাদিকদের অপরাজনীতী। তরুন মেধাকে ধ্বংস করতে জামালকে ফাঁসানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন- ঢাকার সাংবাদিক নেতাদের সাংবাদিক মীর জামালের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করেন তিনি।

গত বছরের ২৪ এপ্রিল সদরের পানামা রোড এলাকার লামিয়া নামে এক নারী সম্মানহানি ও তাদের বসতঘরে টাকা ও স্বর্নালংকার লুটের অভিযোগ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক মীর জামালসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: