শ্রেণিকক্ষে নির্মাণ সামগ্রী, গাছতলায় ক্লাস শিক্ষার্থীদের
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
সারাদেশের মত রাজশাহীর চারঘাটেও দীর্ঘ দেড় বছর পর খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে শিক্ষার্থীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সাথে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করলেও উপজেলার পিরোজপুর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পর শুরুর ক্লাসে তাদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেছে গাছতলায়। এমনকি বসার জন্য ছিল না কোনো বেঞ্চ।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে উপজেলার পৌর এলাকার কাঁকরামারী বাজার সংলগ্ন পিরোজপুর (১) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়- তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাস চলছে গাছের নিচে ইটের খোয়া স্তুপ করে রাখা উঁচু জায়গায়। আর পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলছে পাশর্^বর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটা শ্রেণিকক্ষ ধার করে। এ অবস্থায় রোদ ও গরমে চরম ভোগান্তিতে থাকতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়- বিদ্যালয়ে অফিস, স্টোররুম ও শ্রেণিকক্ষ মিলে মোট ৯টি কক্ষ ছিল। তার মধ্যে মাত্র দুটি ছিল ছাদ দেয়া কক্ষ। নতুন ভবনের কাজ চলায় টিনশেটের ৭টি কক্ষ ভেঙে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে ছাদ দেয়া দুই কক্ষের একটি অফিস কক্ষ হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। অন্যটিতে করা হয়েছে ঠিকাদারের স্টোররুম। এতে রাখা হয়েছে রড, সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী। এছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে পড়ে রয়েছে ইট, বালু ও মাটির স্তুপ। বিদ্যালয়টিতে মোট ২৯২ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে গতকাল স্কুল খোলার প্রথম দিনে পঞ্চম শ্রেণির ৬২ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ৫০। তৃতীয় শ্রেণির ৭৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৩ জন উপস্থিত ছিল।
তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাফিজ রেজা বলেন, অনেকদিন পর স্কুল খুলেছে। ৮ টার সময় থেকে এসে বসে আছি। কিন্তু রুমে বসে ক্লাস করতে পারেনি। রোদের মধ্যে গাছতলায় ইটে বসে ক্লাস করেছে। এমন অনেক শিক্ষার্থী প্রচ- রোদ আর গরম উপেক্ষা করে ক্লাস করার কথা জানায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মুরাদ আলী বলেন, করোনার শুরুতে দোতলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। কথা ছিল ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। কিন্তু দেড় বছরের বেশি সময়েও কাজ শেষ হয়নি। আবার স্কুলের দুইটা রুমের একটা রুমে মালামাল রেখেছে ঠিকাদার। তাই বাধ্য হয়েই তৃতীয় শ্রেণির গাছ তলায় ক্লাস করাতে হয়েছে। পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রুম চেয়ে নিয়ে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নিয়েছি।
চারঘাট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাাফিজুর রহমান বলেন, ভবন নির্মাণের সামগ্রী বিদ্যালয় রাখার কোনো নিয়ম নেই। আমরা প্রতিটা ঠিকাদারকে বিষয়টা জানিয়েছি। তবুও কিছু প্রতিষ্ঠান নির্মাণ সামগ্রী রাখা আছে। নির্মাণকাজের ধীরগতি ও ভবন নির্মাণের সমস্যা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা জানানো হয়েছে।