শরীয়তপুরে ৮২৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদানের জন্য প্রস্তুত
মোঃ রোমান আকন্দ, (শরীয়তপুর) :
বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় শরীয়তপুর জেলার ৬টি উপজেলায় সরকারী ও বেসরকারী ৮২৭টি স্কুলে পাঠদানের জন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও ধোয়া মূছার কাজ শেষ করে জীবানুমুক্ত করে পাঠদানের জন্য প্রস্তÍত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে ৬৯৮টি প্রথমিক বিদ্যালয় ও ১২৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘ দেড় বছর পরে বিদ্যালয় খোলার পর স্কুলে শিক্ষার্থীরা আসবে কলকাকলিতে ভরে উঠবে বিদ্যালয়। আর বিদ্যালয়ে ফিরে আসবে শিক্ষার পরিবেশ । শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দ ও শিক্ষার আগ্রহ ফিরে আনতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী স্কুল খোলার শুরুতে শিক্ষার্থীদেরকে ফুল দিয়ে বরন করে মিষ্টি মুখ করাবে এমন প্রস্তুতি ও গ্রহন করেছে। তাদের মধ্যে এখন আনন্দের জোয়ার বইছে। ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খুলে দেয়ার সরকারী নির্দেশনা আসার পর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাগণ বিদ্যালয় গুলো পরিদর্শন শুরু করেন। তারা প্রধান শিক্ষকদেরকে নিয়ে ভার্চুয়াল মিটিং করে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা ধোঁয়া মুছার কাজ শেষ করে জীবানুমুক্ত করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আনতে নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনা পেয়ে সবাই বিদ্যালয় গুলোকে পাঠদানের জন্য প্রস্তুিত রেখেছেন। ইতিামধ্যে জেলার ৬০টি প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছিল। এরমধ্যে ৫৭টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ঐ সকল বিদ্যালয় গুলোতে পাঠদানের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। গত তিনদিন বন্যার পানি কমতে থাকায় ঐ সকল বিদ্যালয় থেকে পানি নেমে গেছে। ফলে দুঃশ্চিন্তা থেকে নিস্তার পেয়ে শান্তির হাফ ছেড়েছে কতৃপক্ষ। শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা,বিদ্যালয়ের শিক্ষক,অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রিদের মধ্যে এখন আনন্দের বন্যা। রাত পোহালেই স্কুল খোলা। সকলের মধ্যেই আশার আলো সঞ্চার হয়েছে। দেড় বছর বিদ্যালয় বিমুখ শিক্ষার্থীরা অলস সময় কাটিয়েছে ।খেলাধূলা ও ঘোরাফেরা করেই সময় পার করেছে। এখন স্কুল খুলবে সহপাঠিদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত হবে। এক সাথে কি মজা হবে ।
এ ব্যাপারে ধামারন ত্রিপল্লী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫মশ্রেনীর ছাত্র আবদুল্লাহ মুনতাসির এর বাবা মোঃ মামুন খাকি বলেন, দেড় বছর পরে বিদ্যালয় খুলবে। শিশুরা বিদ্যালয়ে গিয়ে লেখা পড়ায় মনোযোগী হবে শুনে আমরা আনন্দিত হয়েছি। দেড় বছরে লেখা পড়ার অনেক ক্ষতি হয়েগেছে । যা পুষিয়ে উঠতে ওদের অনেক সময় লাগবে। আমরা চাই স্কুল খোলা থাকুক।
এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলার ধামারন ত্রিপল্লী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিলু সামচুন নাহার বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর পরে বিদ্যালয় খোলার নির্দেশনা পেয়ে আমরা বিদ্যালয় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও ধোয়া মুছার কাজ শেষ করে জীবানু মুক্ত ক্লাস রুম প্রস্তÍত রেখেছি। বিদ্যালয় খোলার শুরুতে শিক্ষার্থীদের মনে আনন্দ দেয়া ও শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করার জন্য তাদেরকে বরন করে নিব। স্কুল খুলবে ,কচিকাচা শিশুদের কল কাকলিতে ভরে উঠবে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ । আমরাও পারবো আমাদেব রুটিন কাজে ফিরে যেতে এ আনন্দ ও খুশিতে আমাদের মন উচ্ছাসিত।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যে সকল বিদ্যালয় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছিল। গত তিনদিন পানি কমতে থাকায় সে সব বিদ্যালয় থেকে পানি নেমে গেছে। এখন পাঠদানে আর কোন সমস্যা হবেনা ইনশা আল্লাহ। ৬৯৮টি বিদ্যালয় পাঠদানের জন্য উপযোগী করে প্রস্তÍত রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. এমারত হোসেন মিয়া বলেন, ১২৯টি বিদ্যালয় পাঠদানের জন্য সার্বিক ভাবে প্রস্তÍত রাখা হয়েছে। যেসব বিদ্যালয়ে পানি উঠেছিল সে সব বিদ্যালয় থেকে পানি নেমে গেছে। বিদ্যালয় খোলার নির্দেশ পেয়ে অনেক খুশি হয়েছি।