ইসলামপুরে প্রধান শিক্ষক, শিক্ষিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে সাময়িক বহিস্কার; তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন
শামীম আলম, জামালপুর :
সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি সময়ে জামালপুরের ইসলামপুরে টাবুরচর শেখেরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুকুজ্জামান বিপ্লব কর্তৃক একই প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষিকাকে ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে ওই ভোক্তভোগী শিক্ষিকা উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট বিচার চেয়েছেন। জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক প্রধান শিক্ষক ফারুকুজ্জামান বিপ্লবকে সাময়িকভাবে বহিস্কার করেছে ও তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করেছে।
জানা গেছে, সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যথা সময়ে বিদ্যালয় অবস্থান করার কথা থাকলেও নারী লোভী প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে দায়িত্ব পালান না সপ্তাহে একদিন বিদ্যালয়ে হাজির হয়েই বুধবার প্রতিষ্ঠানের কক্ষে একই প্রতিষ্ঠানের ক“’ আদ্য অক্ষরের এক সহকারী শিক্ষিকাকে একা পেয়ে বিদ্যালয়েই শ্লিলতাহানীর চেষ্টা করে। এই ঘটনা বিচার চাইতে ওই শিক্ষিকা বৃহস্প্রতিবার ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে আসলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাকে ডিপিও’ওর কাছে পাঠান।
এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফেরদৌস ঘটনার সত্যতা শিকার করে জানান, মৌখিকভাবে ওই শিক্ষিকা বিচার প্রার্থী হলে আমি বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অবহিত করার জন্য তাকে জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠিয়েছি।
এব্যাপারে ক্লাস্টার এটিও সোহেল মাহমুদ জানান, ঘটনার সঠিক বিচার হবে, এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে উর্ধ্বন কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার জন্য একটি প্রতিবেদন তৈরী হচ্ছে। জানা যায়,দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুকুজ্জামান ওই সহকারী শিক্ষিকাকে উত্যাক্ত করে আসছিল। ঘটনাটি ভোক্তভোগী শিক্ষিকা ক্লাস্টার এটিওকেও অবহিত করেছিলেন। কিন্তু কোন বিচার হয়নি।
এব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। তিন সদস্য তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
অভিযোগকারী শিক্ষিকার সাথে বৃহস্প্রতিবার ফোনে কথা হলে তিনি জানান, তিনি জামালপুরে আছেন বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে পরে কথা বলবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোক্তভোগী ওই শিক্ষিকা, নারী লোভী ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুকুজ্জামান, তার স্ত্রী শায়লা আক্তার ও নাছিমা খাতুনসহ মোট ৪জন শিক্ষক রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। একটি পদ শুন্য রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, ফারুকুজ্জামান প্রধান শিক্ষক হওয়ার সুবাদে তার স্ত্রীসহকারী শিক্ষিকা শায়লা বিদ্যালয়ে ঠিকমতো আসেন না। বৃহস্প্রতিবার দুপুরে ওই প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটি খোলা পাওয়া যায়নি, পাওয়া যায়নি কোন শিক্ষক শিক্ষিকাকে। স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহের মধ্যে গতকাল প্রধান শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা এসেছিল। প্রধান শিক্ষক তার পরিবার নিয়ে বর্তমানে থাকেন মেলান্দহ উপজেলায়। এ ব্যাপারে অভিযোক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুকুজ্জামান বিপ্লব এর সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য যে, করোনার কারণে গতবছরের ১৭মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। গত ২৩আগষ্ট থেকে অফিস খোলা রেখে শিক্ষকদের পাঠদানে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।