ঝালকাঠিতে ভিটিআই নির্মাণ রশি টানাটানিতে ঝুলছে ১৭ বছর ধরে
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ-
ঝালকাঠি জেলা সদরে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ভিটিআই) নির্মাণ প্রকল্পটি ১৭ বছর ধরে দুটি প্রতিষ্ঠানের রশি টানাটানিতে সমন্বয়হীনতায় ঝুলে রয়েছে এবং অনিশ্চিত হয়ে পরেছে এর বাস্তবায়ন। ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনসহ ভিটিআই প্রকল্পে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পভূক্ত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আওতাধীন ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও ঝালকাঠি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যে রশি টানাটানির কারণে এই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে। ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো: জোহর আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যলয় ও ট্যেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দুটি পক্ষের অনঢ় অবস্থানের কারণে সমন্বয় করা সম্ভব হয়নি। এই শিক্ষা জোনের প্রস্তাবিত জায়গাটি গনপূর্ত বিভাগের অধিগ্রহনকৃত হওয়ায় জেলা প্রশাসক গনপূর্ত মন্ত্রনালয়কে জায়গাটি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কাছে হস্তান্তর করার জন্য চিঠি দিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এর কোন সুরাহা হয়নি। ঝুলেই রয়েছে জেলা পযার্য়ের ২০ কোটি টাকার এই মেঘা প্রকল্পটি। এ বিষয় আওয়ামীলিগের উপদেষ্টামন্ডলীর অন্যতম সদস্য ও ঝালকাঠি ২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমির হোসেন আমুর জোরালো হস্তক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, সুগন্ধা নদীর তীরে অবস্থিত ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়টি ষাট দশকে তীব্র নদী ভাঙ্গনের করাল গ্রাসে গনপূর্ত বিভাগের অধীগ্রহনকৃত উত্তর দিকে সরিয়ে বর্তমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালটি নির্মাণ করা হয়। ২০০৩ সালে ঝালকাঠি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে শহরতলি বিকনা মৌজায় ২.৭ একর জমি অধিগ্রহনের প্রস্তাব করা হয়। শহর থেকে দূরে হওয়ায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক কৃর্তক ঘোষিত শিক্ষাজোন এলাকার নদী পাড়ের ঝুকিপূর্ন অবস্থার মধ্যেও ১.৭ একরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ফেলে যাওয়া পরিত্যাক্ত জায়গায় ঝালকাঠি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর একাডেমিক ভবন নিমার্ন করা হয়। জেলা প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত শিক্ষার জোনের আওতায় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, টেকনিক্যল স্কুল এন্ড কলেজ, জেলা শিক্ষা অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও অধুনালুক্ত পথকলি বিদ্যালয়, যা বর্তমানে শিশু কল্যান বিদ্যালয় রয়েছে। এই জোনের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের পিছনে ১ একর জায়গায় ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট নির্মাণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দেয়। এই জায়গাটির মধ্যে থাকা একটি বড় গভীর পুকুর ভরাট সহ ২ কোটি টাকা ব্যয়ে চারিপাশে সিমানা প্রাচীর নির্মাণ প্রকল্প খাত থেকে ব্যায় করা হয়।
সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দাবি, এই জায়গাটি তাদের ক্যাম্পাসের মধ্যে এবং সেখানে এই প্রতিষ্ঠান করা হলে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ সহ সার্বিক পরিবেশ নষ্ট হবে। অন্য দিকে টেকনিক্যল স্কুলের দাবি প্রকল্পটি জেলা সদরে অবস্থিত হতে হবে এবং শহরতলির প্রস্তাবিত বিকনা মৌজায় এই প্রতিষ্ঠান করা হলে ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া যাবে না ও চরমভাবে ব্যাহত হবে বর্তমান সরকারের ক্রমবর্ধমান কারিগরি শিক্ষা চাহিদা ।
অন্যদিকে ৬ষ্ট শ্রেণি থেকে এসএসসি ও এইচএচসি কারিগরি শিক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে মর্মে ঝালকাঠি স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ নীল রতন দত্ত জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, বর্তমানে তাদের প্রতিষ্ঠানে প্রভাতী ও দিবা শাখায় ৭০০ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। টেকনিক্যাল স্কুলের অবকাঠামোতে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস করার মতো জায়গার সংকুলন হচ্ছে না এবং জরুরি ভিত্তিতে ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট নিমার্ন অপরিহার্য হয়ে পরেছে। সরকার ভোকেশনাল কোর্স প্রবর্তনের জন্য নতুন ১৩ টি জেলা সদরে ১৩ টি ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট নির্মান করছে এবং এর মধ্যে ঝালকাঠি জেলায় এই প্রকল্পটি।