গণধর্ষণ মামলায় আরও ৩ জন গ্রেফতার : সংবাদ সম্মেলনে এসপি
নুর উদ্দিন সুমন, (হবিগঞ্জ) :
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুড়া হাওরে নৌকা ভ্রমণে গিয়ে নববধূকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় রাঙ্গামাটি থেকে আরও তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার মোড়াকরি ইউনিয়নের পাতা মিয়ার ছেলে হ্নদয় মিয়া(২২), বকুল মিয়ার ছেলে সুজাত মিয়া(২৩), নিজাম ওরফে মিজানের ছেলে জুয়েল মিয়া(২৫)। এ তথ্য নিশ্চিত করেন লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বিষয়।
এ বিষয়ে সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩ টায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিং করেন।
তিনি জানান, ঘটনার সাথে জড়িত তাদের সহযোগী নাইমুর রহমান শুভ(১৯), কে বানিয়াচং থানা পুলিশ ও মিঠু মিয়া (২১) সোলায়মান হোসেন রনি (২২), কে র্যাব ৯ এর হবিগঞ্জ সিপিসি ১ গ্রেফতার করে। এর পর থেকে হৃদয় সুজাত ও জুয়েল এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে গতকাল রবিবার রাতে লাখাই থানার ওসি মোঃ সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মহিউদ্দিন সুমন সহ একদল পুলিশ শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান পরিচালনা করে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার নানিয়ারচর থানাধীন ইসলামপুর বউবাজার এলাকার পাহাড়ের পাদদেশ থেকে গ্রেফতার করেন। আটককৃত আসামী পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিষয়ে স্বীকার করেছে। তাদের স্বীকারোক্তি আদালত কর্তৃক রেকর্ডের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি জানান, এ পর্যন্ত মামলার এজাহারনামীয় ৩ জনসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মাহমুদুল হাসান, হবিগঞ্জ সদর সার্কেল মাহফুজা আক্তার শিমুল, বাহুবল সার্কেল মো: আবুল খায়ের, বানিয়াচং থানার ওসি মোঃ সাইদুল ইসলাম, সদর থানার ওসি মো: মাসুক আলী, ওসি ডিবি মো: আল আমিন, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ ফরিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাসুদ আলী ফরহাদ সহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
প্রসঙ্গত : গত ২৫ আগস্ট দুপুরে নবদম্পতি তাদের এক বন্ধুকে নিয়ে টিক্কাপুড়া হাওরে নৌকাভ্রমণে যান। সেখানে আরেকটি নৌকা নিয়ে আট যুবক তাদের নৌকায় হানা দেয়। দুই বন্ধুকে মারধর করে নববধুকে তারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাদের নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করে আট যুবক। নগ্ন ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ৯ লাখ টাকা দাবি করে তারা। টাকা না পাওয়ায় ভিডিওটি এলাকার কয়েকজনের কাছে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার নববধুর স্বামী আটজনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলা করেন।