শিরোনাম

South east bank ad

জীবিত স্বামীদের মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

 প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আব্দুর রহমান, (নেত্রকোনা) :

নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানার জাওয়ানী ও ভূগি গ্রামে ১২জন মহিলা জীবিত স্বামীকে মৃত দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলন করছেন। এ  ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে জেলা নেত্রকোনা  প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকার সুমন নামের এক ব্যক্তি। সম্পূর্ণ সুস্থ্য-সবল এবং প্রবাসীর নামেও প্রতিবন্ধী কার্ড করে নিয়োমিত ভাতা উত্তোলন করছেন। নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল কালাম খান, টাকার বিনিময়ে জীবিত স্বামীকে মৃত বানিয়ে বিধবা ভাতা এবং সুস্থ্য মানুষকে প্রতিবন্ধীর কার্ড করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

টাকা না দিলে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এমনকি কোন সরকারি অনুদানই জোটেনা কারো কপালে এমন অভিযোগ উঠেছে ইউপি মেম্বার আবুল কালাম খানের বিরুদ্ধে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, জাওয়ানী গ্রামের বিধবা ভাতাভূগী এখলাছ উদ্দিনের স্ত্রী মোছা: নুরজাহান হিসাব নং-১৬০৪৫, হাসেন আলীর স্ত্রী মোছা: কুলসুমা হিসাব নং-১৬১৩৪, আলী নেওয়াজ’র স্ত্রী মোছা: যবেদা হিসাব নং-১৪৯৫৫, জহর উদ্দিনের মোছা: রুমেলা হিসাব নং-১১৫৬৫৩, হাসিম উদ্দিনের স্ত্রী মোছা: হালেমা হিসাব নং-১৪৮০০, আব্দুর রহিমের স্ত্রী মোছা: আছিয়া বেগম হিসাব নং-৪৫৪, সিদ্দিক খানের স্ত্রী মোছা: রানু বেগম হিসাব নং-১৫৬৫৪, মরম আলীর স্ত্রী মোছা: মাহমুদা হিসাব নং-১২৫, বজলুর রহমানের স্ত্রী মোছা: জমিলা হিসাব নং-৪৯, রইছ উদ্দিনের স্ত্রী মোছা: ফিরোজা হিসাব নং-৬২ এবং ভূগী গ্রামের নবী হুসেনের স্ত্রী মোছা: জুলেখা হিসাব নং-৫৮, আবু হোসেনের স্ত্রী মোছা: নাসিমা হিসাব নং-১৬৩২২। প্রত্যেকের স্বামী জীবিত এবং তারা নিয়োমিত বিধবা ভাতা উত্তোলন করছেন। 

প্রতিবন্ধী না হয়েও প্রতিবন্ধীর কার্ড পেয়েছেন জাওয়ানী গ্রামের আব্দুল হেলিমের ছেলে প্রবাসী শহিদ খান আইডি নাম্বার ০৩৭২০০১৫৬৫০ বিদেশে অবস্থান করলেও তার নামে নিয়োমিত প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করছেন। আব্দুর রহমানের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন আইডি নাম্বার ০৩৭২০০১৫৬৩৬, আব্দুল মজিদ খানের ছেলে কামাল খান আইডি নাম্বার ০৩৭২০০১০৩৯৩, হাসেন আলীর ছেলে লাল মিয়া আইডি নাম্বার ০৩৭২০০১০৩৮৯ প্রত্যেকেই সম্পূর্ণ শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ্য এবং নিয়োমিত প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন করছেন।

জাওয়ানী ও ভূগী গ্রামে বর্তমানে ৫১জন মহিলা বিধবা ভাতা এবং ৫০জন প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়োমিত উত্তোলন করছেন।

নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আবুল কালাম খান ভাতার কার্ড করিয়ে দিতে টাকা নেওয়ার বিষয় এড়িয়ে গেলেও তিনি ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান।

এদিকে, অভিযোগকারী জানান অভিযোগ দেয়ার পর থেকে আমাকে  দেয়া হচ্ছে খূন জখম সহ নানান ধরনের হুমকি। এতে আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এমন অবস্থায় প্রশাসনিক নিরাপত্তা না পেলে এলাকায় বসবাস করা খুবই কঠিন হবে।নেত্রকোনা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক, মো: আলাল উদ্দিন অভিযোগের বিষয়ে জানান, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় ভাতা কার্যক্রম ইউনিয়ন কমিটিতে ন্যস্ত।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ভাতা কার্যক্রম কমিটির সভাপতি, সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী কমিটির সদস্য সচিব এবং ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য উক্ত কমিটির সদস্য থাকে। ইউনিয়ন কমিটি ভাতার তালিকা তৈরি করে উপজেলা কমিটিতে প্রেরণ করেন। উপজেলা কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান, সহ সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সদস্য সচিব উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এবং সকল ইউপি চেয়ারম্যান কমিটির সদস্য। তালিকা উপজেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করে অনিয়ম বা অভিযোগ পেলে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে বৈধ আবেদনকারীর তালিকা চুড়ান্ত অনুমোদন করে।

উপজেলা সমাজসেবা অফিস সেই তালিকা অনুযায়ী ভাতা প্রদান করে থাকে।অভিযোগের বিষয়ে ইতোমধ্যে  তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে নিয়মবহির্ভূতভাবে ভাতার কার্ড দেওয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: