বগুড়ার দুই উপজেলায় ৫৮ গ্রাম প্লাবিত
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টির সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা নাগাদ পানি বিপৎসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী তীরবর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসংলগ্ন নিচু এলাকার বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং চরাঞ্চলের ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যমুনা নদী ফুলেফেঁপে ওঠায় সারিয়াকান্দি উপজেলা এলাকার ৬১ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ৫৬টি গ্রামের ৯ হাজার ৫০০ পরিবারের ৩৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। পাশের ধুনট উপজেলায় এখনও ফসলি জমি আক্রান্ত না হলেও চরবেষ্টিত দুটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের প্রায় ৫০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেখানেও ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুর রহমান তাসনিয়া জানান, আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকেই যমুনায় পানি বাড়তে শুরু করে। তবে ২৬ আগস্ট দুপুরে তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল হালিম জানান, বন্যায় ৫০ হেক্টর রোপা আমনসহ এ পর্যন্ত ৬১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) সাইফুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় বিতরণের জন্য ৩০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ধুনট উপজেলায় ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর কূল উপচে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বদিকের লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরে (পূর্বদিকে) ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পুকুরিয়া, ভুতবাড়ি, কৈয়াগাড়ি, মাধবডাঙ্গা, রঘুনাথপুর, ভান্ডারবাড়ি, দক্ষিন শহড়াবাড়ি, বানিয়াজান ও শিমুলবাড়ি গ্রামের নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল জানান, তার ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের কমপক্ষে ৫০০ পরিবারের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। তবে, এখনও মানুষের জীবনযাপন স্বাভাবিক রয়েছে। বানভাসিদের জন্য ৯ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে।
পাউবোর বগুড়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, উজানে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তাতে যমুনায় আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি বলেন, পানি বাড়লেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের কোনো আশঙ্কা নেই। এ কারণে বড় ধরনের বন্যার শঙ্কাও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।