শিরোনাম

South east bank ad

করোনা হানা দিতে পারেনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে

 প্রকাশ: ২৭ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :

কর্তৃপক্ষের কঠোর সতর্কতার কারণে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস হানা দিতে পারেনি। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) কারাগারের সিনিয়র জেলা সুপার সুব্রত কুমার বালা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- কিছুদিন আগেও রাজশাহীতে সনাক্তের হার ৫০ শতাংশের ওপরে ছিল। হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। রাজশাহীর প্রায় সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান করোনার ভয়াল থাবা থেকে পায়নি রক্ষা। তবে এরমধ্যেই এখনও সুরক্ষিত আছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দীরা।

কারা সূত্রে জানা গেছে, হাজতি এবং কয়েদি মিলে এখানে প্রতিদিন গড়ে অন্তত তিন হাজার বন্দী থাকেন। কিন্তু এদের কেউই করোনায় আক্রান্ত নন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা বলছেন, তাঁদের সতর্কতা সুরক্ষা দিয়েছে বন্দীদের। তিনি বলেন, নতুন কোন বন্দী এলে কারাফটকেই তাঁর পুরনো মাস্ক ফেলে দিয়ে নতুন মাস্ক দেওয়া হয়। ফটকেই হাত-পা ধুইয়ে তাঁকে ভেতরে নেওয়া হয়।

এরপর নতুন বন্দীদের কোয়ারেন্টিন ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। চারটি কোয়ারেন্টিন ওয়ার্ড করা হয়েছে কারাগারে। সেখানে নতুন বন্দীরা ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকেন। এরপর তাঁদের অন্য সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। কোয়ারেন্টিন ওয়ার্ডে নতুন বন্দীকে নেওয়ার পরই তাঁর গোসল নিশ্চিত করা হয়। বন্দীর পরনে থাকা কাপড়-চোপড় ধুয়ে নেওয়া হয়। কারও কাছে পরনের ছাড়া অন্য কোন পোশাক না থাকলে তাঁকে কারাগার থেকে নতুন পোশাকও দেওয়া হয়।

ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া বর্তমানে বন্দীদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাত বন্ধ রয়েছে। সরাসরি সাক্ষাতের বদলে বন্দীরা এখন নির্দিষ্ট সময় পর পর মোবাইল ফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কারাগারের বন্দীদের করোনামুক্ত রাখতে কারারক্ষী এবং কর্মকর্তারাও সতর্ক থাকেন বলেও জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বলা।

তিনি বলেন, ‘কারারক্ষীরা দায়িত্ব পালনের সময় পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন। তাঁরা বাইরে গেলেও সব সময় হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহার করেন। মুখে মাস্ক রাখেন। কারও সামান্য করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে কারাগারে আসতে বারণ করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হলেই তিনি কারাগারে দায়িত্ব পালনে যান। ফলে রক্ষীদের মাধ্যমেও কারাগারের চার দেয়ালের ভেতর করোনা আসতে পারেনি।’

তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক বন্দীর করোনা পজিটিভ হয়েছিল। ওই বন্দী এক মাস আগে থেকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলেন। সেখানেই করোনায় সংক্রমিত হন। করোনা নেগেটিভ হওয়ার পর তাঁকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়া হয়।

সুব্রত কুমার বালা বলেন, ‘এ রকম দেখা গেছে যে কোন কোন বন্দীর জ্বর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে নেওয়া হয়েছে। তাঁর নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। এতে দেখা গেছে রিপোর্ট নেগেটিভ। ফলে এটা নিশ্চিত যে ওই বন্দী অন্য কোন কারণে জ্বরে ভুগছিলেন, করোনা নয়।’ রাজশাহীতে করোনার ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট আসার পরও কারাগার করোনামুক্ত রাখতে পারাটা একটা সফলতা হিসেবেই মনে করছেন কারাগারের এই কর্মকর্তা।

রাজশাহীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৫ মে। এরপর বাড়তে থাকে করোনা শনাক্তের হার। গত জুনে রাজশাহীতে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার পৌঁছেছিল ৫০ শতাংশের বেশি। তখন হাসপাতালে রোগী রাখার মতোও জায়গা ছিলো না। তবে এই হার কমে শুক্রবার (২৭ আগস্ট) এসে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশে। হাসপাতালেও শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা এখন কম। কমে এসেছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মাত্র ৪ জন রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। যা গত ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মৃত্যু।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: