পানি কমতে শুরু করলেও পদ্মাপাড়ের ৭ হাজার পরিবারের দুর্ভোগ কমেনি
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
কীর্তিনাশা পদ্মার রাজশাহী পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে পানি। শনিবার (২২ আগস্ট) বিকাল ৩টায় রাজশাহীতে পদ্মার পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৭২ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার পানি কমলেও রাজশাহী নগরীতে পদ্মার তীরবর্তী প্রায় ৭ হাজার পরিবারের বসতবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে আছে। প্রায় ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বাড়িঘরে বন্যার পানি উঠায় এসব পরিবারকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও ঝুঁকি কমেনি শহর রক্ষা বাঁধের। প্রচন্ড শ্রুত আঁচড়ে পড়ছে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার সেই টি-গ্রোয়েনে। পরিস্থিতি সামাল দিতে টি-বাঁধের অদূরে ফেলা হচ্ছে বালুর বস্তা।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার এনামুল হক জানান, রবিবার বিকাল ৩টায় রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৭২ মিটার। দুপুর ১২ টায় ছিল ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার এবং ভোর ৬টায় পদ্মার পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৭৮ মিটার। এর আগের দিন শনিবার সকাল ৬টায় পদ্মার পানির উচ্চতা পাওয়া গেছে ১৭ দশমিক ৮৫ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ১৭ দশমিক ৮৩ মিটার। তিনি জানান, রবিবার বিকাল ৩টায় রাজশাহীতে বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পদ্মার পানি প্রবাহিত হচ্ছিলো। আর রাজশাহীতে পদ্মার পানির বিপৎসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার।
নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে- পদ্মায় সামান্য পানি কমলেও এখনও রাজশাহী মহানগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তালাইমারী শহিদ মিনার, পঞ্চবটি ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীরামপুর এলাকায় পদ্মার তীর সংলগ্ন নিচু এলাকাগুলোর বাড়িঘরে এখনো পানি জমে আছে। শুধু ২৪ নম্বর ওয়ার্ডেরই প্রায় দুই হাজার পরিবার জলামগ্ন রয়েছে। এছাড়াও গোদাগাড়ী, পবা ও বাঘা উপজেলার এলাকার পদ্মা পাড়ের নিম্নাঞ্চলের আরও অন্তত পাঁচ হাজার পরিবার পানি বন্দি রয়েছে।
তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার বাসিন্দা মোজাফফর আলী বলেন, ‘প্রায় ১০ দিন ধরে বাড়িঘরে পানি উঠেছে। গরু-ছাগল, হাস-মুরগি নিয়ে খুবই মানবেতর জীবন-যাপন করছি।’
নগরীর ২৪ নম্বর ওয়াডের কাউন্সিলর আরমান আলী বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের নদীর তীরবর্তী দুই হাজারের অধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। শহররক্ষা বাঁধের দক্ষিণ পাশের্^ যারা বসবাস করেন ওই এলাকা তুলনামূলক নিচু হওয়ার কারণেই তাদের এই দুর্ভোগ। তবে পানি যেহেতু কমতে শুরু করেছে তাই আশা করছি- কয়েকদিনের মধ্যে তাদের এই দুর্ভোগ কমে যাবে।’
রাজশাহী পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রিফাত করিম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ টি-গ্রোয়েন ও এর আশপাশে মোট ১৬ হাজার বালুর বস্তা ফেলা হবে। ইতোমধ্যে ১৪ হাজারের বেশি বস্তা ফেলা হয়েছে। তিনি জানান, রাজশাহী শহরের পদ্মাপাড়ের নিচু দু’একটি মহল্লায় পানি ঢুকেছে। তবে গোদাগাড়ী, পবা ও বাঘায় পদ্মার ওপারের চরাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। এসব চরে অনেক পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।