কারাগার থেকে হাসপাতার্লে সাবেক মেয়র
মো.আবু জুবায়ের উজ্জল, (টাঙ্গাইল) :
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান (মুক্তি)।
বুধবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে টাঙ্গাইল কারাগারে অসুস্থ হওয়ায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মেয়র মুক্তি ফারুক আহমদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান (রানার) ভাই ও টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের বর্তমান আওয়ামীলীগ মনোনিত সাংসদ আতাউর রহমান খানের ছেলে।
ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক ছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি। গত বছরের ২ ডিসেম্বর তিনি টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকেই আট মাস ধরে তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দি আছেন।
টাঙ্গাইলের জেল সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মেয়র মুক্তি আজ হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এ কারণে কারাগারের চিকিৎসক তাঁর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন পরে তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। তারপর দুপুরে তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরের দিকে কারা কর্তৃপক্ষ সাবেক মেয়র মুক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা তাঁর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। পরে তাঁকে একটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি এখন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে আছেন।
এ বিষয়ে হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রণব কুমার কর্মকার বলেন, সাবেক মেয়র মুক্তির বুকের ব্যাথা পিঠে ছড়িয়ে পড়ছে। তার শ্বাসকষ্টসহ রক্তচাপ বেড়েছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখাসহ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলাআওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গোয়েন্দা পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলীর নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে। ওই দুই আসামীর জবানবন্দিতে এই হত্যার সাথে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালিন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাসহ তার অপর তিন ভাই পৌরসভার তৎকালিন মেয়র শহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকণ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এরপরই সাবেক সাংসদ রানাসহ ও তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। ২২ মাস পলাতক থাকার পর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সাবেক সাংসদ রানা আদালতে আত্মসর্মপন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রায় তিন বছর কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। তবে এখনও তাঁদের অন্য দুই ভাই এখনো পলাতক।