মেঘনায় অবৈধ জাল পেতে মাছ নিধন
মনিরুল ইসলাম, (বোরহানউদ্দিন) :
মেঘনা নদীতে প্রায় ৩ কিলোমিটার জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে ৪টি খরছি জাল ও ৪টি পিটানিয়া জাল পেতে সকল রকম মাছ নিধন করছে ইউপি চেয়ারম্যান মানিক হাওলাদার ও ইউপি মেম্বার মো: জাহাঙ্গীর মাঝি’র নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী গ্রুপ। ওই সকল জালে ছোট বড় সকল রকম মাছই ধরা পড়ে। ওই জাল হতে কীটপতঙ্গ পর্যন্ত রক্ষা পায় না। এতে চরম হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। ওই জালের সাথে সাধারণ জেলেদের জাল গিয়ে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ওই লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না। তবে প্রশাসন মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান দিলেও এরা থাকেন ধরাছোয়ার বাহিরে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নাকি এ অবৈধ ব্যবসায়া বীরদর্পে করছেন এমন অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রমতে জানা গেছে, মেঘনা নদীর বোরহানউদ্দিন উপজেলার সীমান্তবর্তী হাসাননগর এলাকার রবু’র চর হতে পশ্চিম দিকে প্রায় দের কিলোমিটার এলাকা দখল করে ৪টি খরছি জাল ও রবু’র চরের মাথা হতে নাগর পাটোয়ারী চর পর্যন্ত প্রায় দের কিলোমিটার এলাকা দখল করে ৪টি পিটানিয়া জাল পেতে অবাধে সকল রকম ছোট বড় মাছ নিধন করছে উপজেলার হাসান নগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মানিক হাওলাদার ও ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর মাঝি, তজুমদ্দিন মলংচড়া ইউনিয়নের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর নাজিমুদ্দিন বাবুল চেয়ারম্যান নেতৃত্বে। চারপাশে খুঁটি পুঁতে মাছ ধরা হচ্ছে। এ খুঁটির বেড়ার চারপাশে জাল বাঁধা। জোয়ারে নদী টইটম্বর হলে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা জাল ওপরে তুলে বেঁধে দেওয়া হয়। ভাটায় পানি কমলে বেড়ার মধ্যখানে জাল টেনে মাছের রেনু-পোনা সহ সব ধরা হচ্ছে। এ জালের নাম খরছি জাল। এ প্রক্রিয়া মাছ শিকার একেবারেই অবৈধ।
এছাড়া হাকিমুদ্দিন পল্টনের পূর্ব পাশে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা অবৈধ ভাবে দখল করে বীরদর্পে খরছি ও পিটানিয়া জাল পেলে অবাধে মাছ শিকার করছে একটি প্রভাবশালী গ্রুপ। ওইসকল জাল হতে ছোট বড় যে কোন মাছ এবং যে কোন কীটপতঙ্গ রক্ষা পান না। দীর্ঘ দিন এ জাল নিষিদ্ধ থাকলেও এরা বীরদর্পে তাদের এ অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছেন। এদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয় সাধারণ জেলেরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সত্ব্যে জানান, খুচি জাল ও পিটানিয়া জাল হতে ছোট বড় কোন মাছই রক্ষা পায় না। ওইসকল জাল হতে কীটপতঙ্গ পর্যন্ত রক্ষা পায় না। যে সকল জনপ্রতিনিধিরা নদী হতে এসকল অবৈধ জাল উচ্ছেধ করবে তাদের নেতৃত্বেই দীর্ঘ দিন এ অবৈধ ব্যবসা চলছে। ওই সকল জালে আমাদের জাল গিয়ে পড়লে কেটে আনতে হয়। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ওদের লাঠিয়াল বাহিনী’র ভয়ে মুখ খুলতে পারি না। তাহলে আমাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিসাধন করে থাকে। রক্ষক যখন ভক্ষক হয় তখন আমাদের আর কি করার। প্রশাসন এদের দেখেও না দেখার ভান করে আছে। আমরা শুনছি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এ অবৈধ ব্যবসা দীর্ঘ দিন করছেন। তারা আরোও বলেন, আমরা নদীতে এসকল অবৈধ দখল ও নিষিদ্ধ জাল হতে মুক্তি চাই। লোক দেখানো কোন অভিযান চাই না। প্রশাসনের স্থায়ী কঠোর নজরধারী চাই।
হাসান নগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মানিক হাওলার জানান, আমার খরছি জাল নেই। একটি পিটানিয়া জাল রয়েছে। তাও এখন বন্ধ।
হাসান নগর ইউপি মেম্বার মো. জাহাঙ্গীর মাঝি’র সাথে আলাপ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
ভোলা জেলা মৎস্য অফিসার এস.এম আজহারুল ইসলাম জানান, এ অবৈধ জালের সাথে জনপ্রতিনিধিরা থাকার বিষয়টি খুবই দু:খ জনক। তারাই এগুলো নির্মূল করবে। তিনি আরোও জানান, খরছি ও পিটানিয়া জাল নদীতে ফেলা একেবারেই নিষিদ্ধ। খুব শীঘ্রই প্রশাসন কে সাথে এসকল অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে।