শরণখোলায় মামলাবাজ থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন
নইন আবু নাঈম, (শরণখোলা) :
মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার পূর্ব রাজাপুর (বাওড়) গ্রামের ফুল মিয়া মাতুব্বরের ছেলে ফারুক মাতুব্বর (৪৭) এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার সকালে শরণখোলা প্রেসক্লাবে উত্তর রাজাপুর (বাওড়) গ্রামের সাবেক মেম্বার বারেক শিকদার, একই এলাকার প্রবাসী আঃ জলিল হাওলাদার, বাবুল খান ও সোবাহান ফরাজীসহ ১০/১২জনের উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিবেশী কামাল শেখ।
লিখিত বক্তব্যে কামাল শেখ বলেন, আমাদের প্রতিবেশী ফারুক মাতুব্বর একজন সন্ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ী। সে আমাদের ভোগদখলীয় জমি অন্যায়ভাবে দখল করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ ষড়যন্ত্র করে আসছে । ফারুক মাতুব্বর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে । যাকে খুশি তাকে মারপিট ও কুপিয়ে আহত করছে আবার উল্টা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে । সে একটি মুদি দোকানের আড়ালে মাদক বিক্রয় করাসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত । এমনকি এলাকা থেকে যুবতী মেয়েদের নিয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চট্রগ্রামে নিয়ে ধর্ষণ করে পরবর্তীতে সেই যুবতীকে আটকে রেখে পতিতা ব্যবসা করান।
২০২০ সালে ফারুক মাতুব্বর চট্রগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার শাহিনুর নামে এক কিশোরীর শ্লীলতাহানী করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে পাহাড়তলী থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়, যার মামলা নং ০১ । ২০১৮ সালে প্রতিবেশী রুবেল ফরাজীকে মারপিট করলে তার মা লাইলি বেগম বাদী হয়ে ফারুক মাতুব্বর ও তার ভাই ইলিয়াছ মাতুব্বরকে আসামী করে শরণখোলা থানায় মামলা করেন, যার মামলা নং-১৮। এছাড়া গত সপ্তাহে জমিজমা নিয়ে আমার ছোট ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করলে আমার পিতা ফারুককে নিষেধ করেন । এসময় ফারুক ও তার স্ত্রী আমার পিতাকে মারতে আসেন । পরে মারপিটের ঘটনা সাজিয়ে গত (১০আগস্ট) মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হন এবং আমার বৃদ্ধ পিতা আঃ জলিল শেখ (৬২) কে ১নং আসামী করে শরণখোলা থানায় একটি শ্লীলতাহানীর মামলা করেন। এভাবে একাধীক মামলা ও সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ফারুক মাতুব্বর ও তার পরিবার এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছে । বর্তমানে ফারুক মাতুব্বর আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। তাছাড়া আমার ভাই জামাল শেখ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে এবং শেখ বদিউজ্জামান রিয়াজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরী করে। তারা এখন ফারুক মাতুব্বরের ভয়ে বাড়ী আসতে পারছেনা। এই অবস্থায় আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তাসহ প্রতিপক্ষের মিথ্যা মামলার হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে চাই।
এ ব্যাপারে ফারুক মাতুব্বরের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কামাল শেখের সাথে আমার জমিজমা নিয়ে কোনো ঝামেলা নাই। কয়েকদিন আগে একটা মারামারির ঘটনায় আমার শ্যালক জিয়াউল তালুকদার উপস্থিত থেকে একটি মামলা করিয়েছে। এছাড়া তারা যে অভিযোগ দিয়েছে তা মিথ্যা। আমি একটু ভাল আছি সেটা তারা চাচ্ছেনা বলেই আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ডালিম মাঝির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফারুক মাতুব্বর ও তার বাবা ভাই সবাই খারাপ। কোনো কিছু হলেই তারা মামলা করেন। কোনো মিমাংশা করলেও তা মানেন না। এখন যা বুঝলাম তাতে মামলাটাই হচ্ছে তাদের একটা ব্যবসা। এসব অপকর্মের কারনে এলাকার কেউ তাদেও পছন্দ করে না। তবে ফারুক মাতুব্বরের স্ত্রী একজন ভাল মানুষ কিন্তু বাধ্য হয়ে তার স্বামীর কথা শুনতে হচ্ছে।