শিরোনাম

South east bank ad

পাটের বাম্পার ফলন,কৃষকের মূখে হাসি

 প্রকাশ: ১৭ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

খন্দকার রবিউল ইসলাম, (রাজবাড়ী) :

রাজড়ীতে সোনালী আঁশ পাট চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মূখে হাসি ফুটেছে। বিস্তির্ণ মাঠ জুড়ে পাটের কচিপাতার দুলনীর সঙ্গে ঢেউ খেলছে কৃষকের স্বপ্নও। পাট কাটা, জাগ দেয়া, আঁশ ছাড়ানো, রোদে শুকানোর পর প্রক্রিয়াজাত করার জন্য কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষক পাট বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। বর্তমানে পাট কেটে জাগ দেয়া , ধোয়া ও শুকানোর কাজ কাজ চলছে। ফলন বাম্পার হয়েছে। বর্তমানে রাজবাড়ীর গ্রামগুলিতে পাটের আশ ছাড়ানোর মওসুম চলেছে। জেলার বিভিন্ন হাটে নতুন পাটের আমদানি হচ্ছে।দাম ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।হাটে প্রচুর নতুন পাটের আমদানী হচ্ছে।বিভিন্ন হাটে নতুন পাট প্রতিমন ৪০ কেজি ২ হাজার টাকা থেকে ২২শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সোনালী আঁশ পাটের উৎপাদন ভান্ডার খ্যাত রাজবাড়ী চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ পাটের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় এবং আগাম বন্যা না হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। পাটের এমন বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে পানির সঙ্কটে দুর দুরান্তে নিয়ে পাট জাগ দেয়ায় পরিবহন খরচ ও শ্রমিক সংকটে শ্রমমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা বিধ সমস্যায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

আলাপকালে চাষিরা জানান, পাট চাষ করে তিন মাসের মধ্য পাট ঘরে তোলা যায়। কম সময়ে, কম পরিশ্রমের ফসল পাট। প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ৮থেকে ১০ মণ পাট উৎপাদন হয়। এবার বাজারে পাটের মান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবার বন্যা না হওয়ায় পাট চাষিদের পাটের কোনো ক্ষতি হয়নি। পাটের ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি তারা।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায় গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৪৬হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হলেও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৪৭হাজার ৯শ ৮০হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১০হাজার ১শ ৪৫হেক্টর, পাংশায় ১১হাজার ৬শ ৮০হেক্টর, কালুখালীতে ৯হাজার ৩শ ৫০ হেক্টর, বালিয়াকান্দিতে ১২হাজার ৫শ ৫০হেক্টর এবং গোয়ালন্দ উপজেলায় ৪হাজার ২শ ৮০হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করা হয়েছে। এবার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উন্নতমানের বীজ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ এবং সেচ সুবিধা নিশ্চিত হওয়ায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউপি ২নং ওয়ার্ড মৃধাডাঙ্গা এলাকার কৃষক আজাহার নলিয়া বলেন, ৪বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮থেকে ১০মন পাট উৎপাদন হয়েছে। সার, বীজ, নিরানী ও পাট কাটা, জাগ দেয়ার জন্য কামলা, জাগ দেয়ার পরিবহন খরচ বাবদ সব মিলিয়ে খরচ প্রতিবিঘায় ১০থেকে ১২হাজার টাকা। বাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে ২হাজার ৬শ থেকে ৩হাজার টাকার মধ্যে। মৌসুম শেষ পর্যন্ত দাম এভাবে থাকলে কৃষকরা প্রচুর লাভবান হবে এবং পাট চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।

উপজেলার দৌলতদিয়া ইউপি ৭নং ওয়ার্ড রোকন মোল্লা পাড়া এলাকার কৃষক রহিম ফকির বলেন, গত বছর ৫বিঘা জমিতে পাটের চাষ করে ভাল দাম পাওয়ায় এবার ১০বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছি ফলন ভাল হয়েছে। পরিবহন খরচ, শ্রমিক সঙ্কটে শ্রমমূল্য বৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও ফলন ও দাম বেশী পাওয়ায় আমরা লাভবান হচ্ছি। আশা করছি আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলে পাটের চাষ আরো বেশী হবে।

সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের চরধোপাখালী গ্রামের ওয়াজেদ আলী শেখ বলেন, এবার পাটের ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু এলাকায় পাট পঁচানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি না থাকায় দুরদুরান্তে নদী ও জলাশয়ে নছিমনে করে নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এ ছাড়াও এবার কৃষি শ্রমিক সঙ্কটে তাদের মুজুরীও বেশী। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এবার পাটে আরো বেশী লাভবান হওয়া যেত। তবে যা হয়েছে তাতে আমরা খুশি।

রাজবাড়ীর বানিবহ বাজারের পাট ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন জানান, এবার এ অঞ্চলে ব্যাপক পাটের চাষ হয়েছে। গতবারের তুলনায় এবার পাটের মানও ভাল। তবে কিছু কিছু জায়গায় পানির অভাবে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করতে না পারায় পাটের মান হ্রাস পেয়েছে । তা নাহলে কুষকরা পাটের আরো দাম পেত। কৃষকরা বেশী লাভবান হলে পাটের আবাদ আরো বাড়তো।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ বাহউদ্দিন জানিয়েছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলার ১৪ ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভার মধ্যে
এবার ১০হাজার ১শ ৪৫হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।পাটের প্রকার ভেদে দাম কম বেসি হয়।সুলতানপুর,শহিদওহাবপুর,বসন্তপুর এর দিকেরে পাট বেষ ভালো হয়েছে। সে কারনেই এসকল ইউনিয়নের পাটের দাম ২৫০০/৩হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এছাড়ও অন্য ইউনিয়নের পাট বিক্রি হচ্ছে ২হাজার থেকে ২২০০টাকা।

এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এসএম শহীদ নুর আকবর জানান, জেলায় এ বছর পাট উৎপাদনে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের এ বছরের টার্গেট ছিল ৪৬হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ, অর্জিত হয়েছে ৪৭হাজার ৯শ ৮০হেক্টর। এবার পাটের দামও ভালো। পাটের বাম্পার ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা আগামীতে আরো বেশী পাটের আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: