রাজশাহীতে ভাতিজার হাসুয়ার কোপে চাচা খুন
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভাতিজার হাসুয়ার কোপে প্রাণ মতিউর রহমান মতি (৬০) নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫জন। এদের মধ্যে নিহতের ছেলে ইনছান আলী (২৪) অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। শুক্রবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া ছাউবোনা এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজন নিহতের ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে- উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ভাটপাড়া এলাকার ঝাউবোনা গ্রামের জনৈক জলিল ম-লের দুই ছেলে খলিলুর রহমান ও মতিউর রহমান। পিতার মৃত্যুর পর থেকে খলিল তার ভাই মতিউর রহমানকে পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি ভাগাভাগি না করে একাই ভোগ দখল করে আসছিলেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে খলিল ও মতিউর রহমানের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এই ঘটনার জেরে শুক্রবার সকালে মতিউর রহমান আবারো পিতার রেখে যাওয়া জমির ভাগাভাগি নিয়ে কথা বলতে গেলে দুই ভাই ও তাদের ছেলেদের মধ্যে প্রথমে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুই ভাইয়ের পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে খলিলের ছেলে তোতা মিয়া হাসুয়া দিয়ে চাচা মতিউর রহমান ও তার ছেলে ইনছান আলীকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। সংঘর্ষ থামাতে গেলে মতিউরের বোনের ছেলে কামরুল ইসলামকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। খবর পেয়ে চারঘাট থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত অবস্থায় তোতা মিয়া, খলিলুর রহমান, পিয়ার আলী, ইনছান আলী ও কামরুল ইসলামকে উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবণতি হলে নিহত মতিউর রহমানের ছেলে ইনছান আলীকে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়েছে স্থানীয়রা। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। ঘটনার পর থেকেই বিবাদমান দুটি পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। তালাবদ্ধ করে দুটি পরিবারের সবাই গা ঢাকা দিয়েছে। তবে এ ঘটনায় আর যাতে কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার অবতারণা না হয় সেজন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’ এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থাও নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।