শিরোনাম

South east bank ad

জাল সনদে ১৩ বছর চাকুরী করে হয়েছেন অধ্যক্ষ

 প্রকাশ: ০৪ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা) :

আমতলী বকুল নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো: ফোরকান মিয়ার বিরুদ্ধে বিএ পাশের জাল সার্টিফিকেট দিয়ে ১৩ বছর চাকরী করার অভিযোগ এনে বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নে বুধবার সকাল ১১ টায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: মজিবুর রহমান।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: মজিবুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, বকুল নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের সাবেক তথা কথিত অধ্যক্ষ মো: ফোরকান মিয়া ১৯৯৩ সালে আমতলী ডিগ্রী কলেজ হতে বিএ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে অকৃতকার্য হন।

ওই বছরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আমতলী ডিগ্রী কলেজ থেকে বিএ পাশের একখানা সার্টিফিকেট সৃষ্টি করে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে এমএ পাশ করেন। জাল সার্টিফিকেটের বিষয় জানাজানি হলে বকুল নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রনব কুমার সরকার মো: ফোরকান মিয়ার বিএ পাশের সার্টিফিকেটের বৈধতা যাচাইর জন্য ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর আবেদন করেন।

ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড: হিমাদ্রি শেখর চক্রবর্তি ২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর বকুল নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন, মো: ফোরকান মিয়ার ব্যাচেলর অফ আর্টস ১৯৯২ সেকেন্ড ডিভিশন সনদটি জাল। সনদটি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস হতে ইস্যু করা হয়নি। এ ছাড়া আমতলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মজিবর রহমান একই বছর ৩ অক্টোবর একটি প্রত্যয়ন দেন মো: ফোরকান মিয়া পিতা মো: সেকান্দার আলী হাওলাদার গ্রাম হুলাটানা উপজেলা আমতলী জেলা বরগুনা ১৯৯০-৯১ শিক্ষা বর্ষে বিএ পাশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে ১৯৯২ সনের অনুষ্ঠিত ১৯৯৩ সনের নিয়মিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সরবরাহকৃত টেবুলেশন শীটে মন্তব্য কলামে তদন্ত স্থগিত লেখা আছে এবং ইসলামের ইতিহাস, ইসলামী শিক্ষা ও সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের নম্বরের ঘরগুলো খালি দেখা যায়। তার পরীক্ষার রোল নম্বর ৬৫৮ এবং রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ৫৩৭৫০।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরও বলেন, মো: ফোরকান মিয়া জাল সার্টিফিকেট দিয়ে দীর্ঘদিন চাকরী করার পরে তাকে ওই কলেজে অধ্যক্ষও হয়েছেন। পরে মো: ফোরকান মিয়া অধ্যক্ষের পদ থেকে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর লজ্জায় স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন, কলেজের গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি ফোরকান মিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই জাল জালিয়াতির মামলা করি। সেই মামলায় ফোরকান মিয়া জেল হাজতে যায়।

পরবর্তিতে ফোরকান মিয়া বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি থেকে ২০১৬ সালের ১৪ আগষ্ট বিএ পাশের একটি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে। ওই সার্টিফিকেটের বৈধতা যাচাই বাচাইর জন্য আমি বাংলাদেশ বিশ্ব বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বরাবরে আবেদন করি। মঞ্জুরী কমিশনের উপ পরিচালক জেসমিন পারভিন ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর এক চিঠিতে আমাকে জানান, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি নামক তথা কথিত প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ব বিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত নয়।

তিনি বলেন, ফোরকান মিয়া তাঁর বকেয়া বেতন ভাতা পাবার জন্য ও অধ্যক্ষ নিয়োগ স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে রিট করেন, হাই কোর্ট ফোরকান মিয়ার স্থলে নতুন করে কোন অধ্যক্ষ নিয়োগ না দেওয়ার জন্য তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে পুনরায় নিয়োগ ও বেতন ভাতা দেওয়ার আদেশ দেয়নি। দীর্ঘ ১৩ বছর পর গভর্নিং বডির নতুন এডহক কমিটির সভাপতি মাকসুদা আকতার জোসনা ১৯ জুলাই ফোরকান মিয়াকে কলেজে নিয়ে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিয়ে দেয়। সেই থেকে ফোরকান মিয়া কলেজের কার্যক্রম চালায়।

মজিবুর রহমান বলেন, আমি বিস্তারিত জানিয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ও জাতীয় বিশ্ব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে মো: ফোরকান মিয়া বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। আমি এখন বৈধ অধ্যক্ষ হিসাবে এখন কলেজে কাজ করছি। কী ভাবে বিএ পাশ না করে এমএ পাশ করলেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেছি। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তো বিএ পাশ করা যায় না।

এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগে করা যেত এখন করা যায় না। ১৯৯৩ সালে তো বেসরকারী বিশ্ব বিদ্যালয়ের জম্ম হয়নি। তাহলে আপনি কী ভাবে বিএ পাশ করলেন, এমন প্রশ্নের তিনি জবাব দিতে রাজি নয়। নতুন কমিটির সভাপতি মাকসুদা আকতার জোসনাকে অনেকবার ফোন করে তাঁকে পাওয়া যায়নি।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: