শিরোনাম

South east bank ad

শোভা ছড়াচ্ছে নওগাঁর সারি সারি তাল গাছ

 প্রকাশ: ০৩ অগাস্ট ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আব্দুল্লাহ হেল বাকী (নওগাঁ):

শোভা ছড়াচ্ছে সারি সারি তাল গাছ। নওগাঁর মহাদেবপুরের পল্লীতে ৩ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় ৫ হাজার তাল গাছ পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পরিণত হয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক বিনোদন কেন্দ্রে। নির্মল বাতাস আর তাল সাম্রাজ্যের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর দুরান্ত থেকে আসছেন বিনোদন প্রেমী মানুষ। স্থানীয়রা বলছেন ৩০ বছর আগে রোপন করা এসব তালগাছ বজ্রপাত রোধেও রাখছে ব্যাপক ভুমিকা। প্রান্তিক পর্যায়ের এ তাল বাগান রক্ষাসহ অবকাঠামো উন্নয়নের আশ্বাস উপজেলা প্রশাসনের।

শ্রাবণের ভরা মওসুমে বরেন্দ্র’র মাঠ টইটুম্বুর পানিতে। সে পানিতে প্রস্ততি চলছে রোপা আউস আবাদের। বিস্তৃত মাঠের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে আঁকাবাকাঁ পথ। আশপাশের অন্তত ২০ গ্রামের সংযোগ সড়কটি স্বাধীনতার পর স্থানীয় বাসিন্দারাই তৈরি করেন। প্রথম দিকে সড়কটি গ্রামের মানুষের জন্য ছিল মেঠোপথ । তবে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় সম্প্রতি পাঁকা করা হয়েছে।

নওগাঁর মহাদেবপুরের খাঁজুর ইউনিয়নের কয়ার পাড়ার ১২ কিলোমিটারের এ সংযোগ সড়কের ৩ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে তাল গাছের সারি। তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে-Ñ কবি গুরুর এ কবিতার মতো মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা এ তালবাগান বিনোদনপ্রিয় মানুষের কাছে এক ভিন্ন আমেজ তৈরি করেছে।

সড়কের দু পাশে নিবিড় এ তাল গাছগুলোর গোড়া সাদা চুনকাম করায় দূর থেকে দেখলে ফুটে উঠে গ্রামীণ সৌন্দর্যের অনন্য চিত্র। চারপাশে বিস্তৃত সবুজ মাঠ আর মুক্ত বাতাশ এক ভিন্ন আবহের আবহের সৃষ্টি করেছে।
প্রায় ৩০ বছর আগে গ্রামীণ মেঠোপথ নিয়ে স্বপ্ন বুনে ছিলেন স্থানীয় কয়ারপাড়া গ্রামের বৃক্ষপ্রেমিক ক্ষিতিশ চন্দ্র। নিজ উদ্যেগে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাল বীজ সংগ্রহ করে সড়কের দু পাশে রোপন করেন তিনি। সময়ের ব্যবধানে এসব তালগাছ বড় হয়েছে। এখন অপার সৌন্দর্যের সাথে বজ্রপাত রোধেও ভূমিকা রাখছে।

প্রয়াত ক্ষিতিশের পুত্র তপন মন্ডল জানান, তার বাবা কোনো স্বার্থ নিয়ে এসব গাছ রোপন করেন নি। পরিবেশের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা থেকেই রোপন করেছিলেন এসব তাল গাছ। জীবিত অবস্থায় তার এ তালবাগানের মূল্যায়ন না হলেও মহৎ এ কাজের জন্য স্বজন ও এলাকাবাসী আজ গর্বিত। স্থানীয় প্রবীণ শিক্ষক আশরাফ আলী, বলরাম চন্দ্র বর্মন জানান, জীবিত অবস্থায় আমরা ক্ষিতিশের মূল্যায়ন করতে পারিনি। কিন্ত আজ খুব ভাল লাগছে, তার কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে দেখে। করোনা ও ল ডাউনের মাঝেও সকাল-বিকাল দূর দুরান্ত থেকে তালবাগানের দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ দেখতে আসছে নানা বয়সী মানুষ। নির্মল প্রকৃতির নির্যাস নিতে ক্ষণিক সময় পার করেন দর্শনার্থীরা। তাল সাম্রজ্যের এ সৌন্দর্য ধরে রাখতে বাড়তি কিছু অবকাঠামো গড়ে তোলার দাবি এলাকাবাসীর। এ তালবাগান সংরক্ষণ ও পরিবেশের ভূমিকা তুলে ধরে স্থানীয় ভাবে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করছে।

এ সংগঠনের প্রধান প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, আজ আমরা তালবাগানের জন্য যেমন পুলকিত সে সাথে এ তালবাগানের স্রষ্টা ক্ষিতিশের চেতনা নতুন প্রজম্মের মাঝে তুলে ধরতে চাই।

স্থানীয় খাজুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়াতে প্রয়াত ক্ষিতিশের মতো আরো বেশি তালবাগান গড়ে তুলতে কাজ করবেন। আর তালবাগানের দৃষ্টি নন্দন এ পরিবেশ রক্ষায় সার্বিক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান। স্থানীয়দের মতে সড়কের দু পাশে প্রয়াত ক্ষিতিশ ৫ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় ১৫ হাজার তাল গাছ রোপন করেছিলেন ।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: