পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কার ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে ফেরির মাস্টার
পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সাথে ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনায় রো-রো ফেরি শাহ জালাল এর ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার আব্দুর রহমান ও সুকানি সাইফুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। শনিবার সকালে বাংলাবাজার ঘাট এলাকা থেকে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। তবে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাদের গ্রেফতার করা হবে কিনা সে বিষয় পুলিশ নিশ্চিত করেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে ফেরি শাহ জালালের ধাক্কার ঘটনায় শুক্রবার রাতে মাদারীপুরের শিবচর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। জিডি করেন সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, শিবচরের বাংলাবাজার থেকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে রো-রো ফেরি শাহ জালাল। পথে ফেরির ধাক্কায় পদ্মাসেতুর ১৭ নম্বর পিলারের পাইল ক্যাপের উপরিভাগ ও সাইড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জিডিতে সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের আরো উল্লেখ করেন, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। লিখিত ও মৌখিকভাবে সচেতনতার সঙ্গে ফেরি চলাচলের জন্য বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এমন ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটতে পারে, পদ্মাসেতুর নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে। ফেরির ফিটনেস ছিল কিনা, চালকের যথাযথ যোগ্যতা, শারীরিক সুস্থতা বা অবহেলা ছিল কিনা এসব বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে জিডিতে। এই জিডির পরই শনিবার সকালে ফেরির দুই কর্মচারিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
শিবচর থানার ওসি মিরাজ হোসেন জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে জিডিটি নথিভুক্ত করে এসআই আমির হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল সোয়া নয়টার দিকে পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারের সাথে রো-রো ফেরি শাহ জালাল এর ধাক্কা লাগে। এসময় ফেরিতে থাকা যাত্রীরা ছিটকে একে অপরের উপর পড়ে অনেকেই আহত হন। শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, ‘থানায় ডিডি হওয়ার পরে আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করছি। আর এই তদন্তের স্বার্থেই আমরা রো-রো ফেরি শাহ জালালের ইনচার্জ ইনল্যান্ড মাস্টার অফিসার আবদুর রহমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। আমরা পদ্ম সেতুর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বর্তামানে চালক আমাদের হেফাজতে আছেন।
এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিবচর থানা ফেরি শাহ্ জালালের সুকানি সাইফুল ইসলামকেও থানায় ডাকা হয়েছে। সুকানি সাইফুল দুপুরে থানায় হাজির হয় বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের কী ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে এবং তাদের গ্রেফতার করা হবে কিনা সে বিষয় মাদারীপুর পুলিশ সুপারসহ জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হননি।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’