বিশ্বব্যাপী কোভিড টিকার সমতা নিশ্চিতের আহ্বান নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূসের
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী কোভিড টিকার সমতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
ড. ইউনূস বলেন, ‘মানুষকে নিরাপদে রাখতে টিকাকেন্দ্রিক মুনাফার দেয়াল ভেঙে ফেলতে হবে। আমরা পেটেন্ট-ফ্রি টিকা নিয়ে অনেক কথা বলেছি। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। কারণ টিকা নিয়ে বাণিজ্য চলছে, যা মানুষের টিকা প্রাপ্তি কঠিন করে তুলছে।’
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তিনটি শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এখন পর্যন্ত টিকা থেকে মোট ২৬ বিলিয়ন (দুই হাজার ৬০০ কোটি) মার্কিন ডলার মুনাফা করেছে। এসব প্রতিষ্ঠান আরও মুনাফা করবে। আরও ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এই মুনাফার তালিকায় যুক্ত হবে। তাই, বিষয়টি এখন হয়ে গেছে—মুনাফা বনাম জীবন। মানুষ মারা যাচ্ছে, আর কিছু লোক তাদের নিজেদের স্বার্থে টিকা হাতে রাখতে চাচ্ছে। আমরা বলেছি—এই (টিকাকেন্দ্রিক মুনাফা চক্র) ভাঙতে হবে, অন্যথায় এটি (টিকার সমতা) নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। এখন পর্যন্ত আমরা বিশ্ব জনসংখ্যার একটি অংশকে কেবল টিকার আওতায় আনতে পেরেছি।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করার বিষয়ে কী প্রত্যাশা করছেন—জানতে চাইলে ড. ইউনূস জানান, বিশ্বব্যাপী টিকার সমতা নিশ্চিত করতে তাঁরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূস ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ‘অলিম্পিক লরেল’ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
অ্যাথলেটদের প্যারেড শুরুর আগে ভার্চুয়ালি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘অলিম্পিক লরেল’ সম্মাননা দেওয়া হয়। এরপরই ইউনূস সেন্টারের ফেসবুক পেইজ থেকে তাঁর বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। যেখানে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘অলিম্পিক লরেল জিতে আমি অভিভূত, এবং সম্মানিত বোধ করছি। একই সঙ্গে আমি দুঃখিত যে, সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি।’
এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বের অ্যাথলেটদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারাই পরিবর্তনশীল বিশ্বের নেতৃত্ব দিতে পারেন। একই সঙ্গে সৃষ্টি করতে পারেন তিনটি জিরো বা শূন্যের। এগুলো হচ্ছে—শূন্য কার্বন নির্গমন, শূন্য দারিদ্র্য এবং শূন্য বেকারত্ব। প্রত্যেকের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার শক্তি সৃষ্টি করার মাধ্যমেই এগুলো করা সম্ভব।’
অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বার্তায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) সফলতা কামনা করেন। তিনি ক্রীড়ার মাধ্যমে বিশ্বকে আরও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে আইওসি’র ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই প্রতিযোগিতার সবাইকে শুভকামনা জানাচ্ছি। আমাকে এই সম্মাননা দেওয়ায় আবারও ধন্যবাদ।’