এবারও পশুর চামড়ার ভালো দাম পাননি কোরবানিদাতারা
পবিত্র ঈদুল আজহায় এবারও পশুর চামড়ার ভালো দাম পাননি কোরবানিদাতারা। মাঝারি আকারের একটি গরুর চামড়া ২০০ টাকার আশপাশের দামে বিক্রি হয়েছে। অনেক এলাকায় ক্রেতার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফলে কোরবানিদাতারা চামড়া মাদ্রাসায় দান করেন।
যদিও চামড়া খাতে রপ্তানি আয় বাড়ছে। গত ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে চামড়া খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৮ শতাংশ। এ সময়ে আয় হয়েছে ৯৪ কোটি মার্কিন ডলার।
অবশ্য গত বছরের মতো এ বছর চামড়া নষ্ট হয়নি। আড়ত পর্যায়ে গত বছরের চেয়ে এবার একটু বাড়তি দামও দেখা যায়। ঢাকায় চামড়ার পাইকারি ব্যবসাকেন্দ্র পুরান ঢাকার পোস্তায় মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এ বছর তাঁরা প্রতিটি চামড়ার দাম গত বছরের চেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি পেয়েছেন। যদিও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষও মনে করেন, এবার দামের ক্ষেত্রে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দু–একটি জেলা থেকে কম দামে বিক্রির অভিযোগ এসেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি।’
ঈদুল আজহার আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বছর ঢাকার ক্ষেত্রে লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। এ দর গত বছরের চেয়ে বর্গফুটপ্রতি ৫ টাকা বেশি। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা ও বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
সাধারণত মাঝারি আকারের একটি গরুর চামড়ার আকার হয় ২৫ বর্গফুটের মতো। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবার যে দাম ঠিক করে দিয়েছে, তাতে এই আকারের একটি লবণযুক্ত গরুর চামড়া ঢাকায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। ঢাকার বাইরে দাম হওয়ার কথা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। একটি গরুর চামড়া সংরক্ষণে এবার লবণের পেছনে ৫০ থেকে ৬০ টাকার মতো ব্যয় হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাধারণ মানুষ চামড়ার ভালো দাম না পাওয়ার কারণ ক্রেতা না থাকা। একাধিক মৌসুমি ব্যবসায়ী চামড়া কিনতে চাইলে বিক্রেতা বাড়তি দাম চাওয়ার সুযোগ পান। এবারও যেহেতু মাঠপর্যায়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীর সংখ্যা একেবারেই কম ছিল, সেহেতু বিক্রেতা দাম চাওয়ার সুযোগ পাননি।
ঈদুল আজহার দিন (বুধবার) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এবং খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পশু জবাইয়ের পর চামড়া অনেক সময় পড়ে ছিল। ক্রেতা যায়নি। পরে তা মাদ্রাসায় দান করেন কোরবানিদাতারা। শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই চিত্র ছিল একই। ঢাকার মাদ্রাসাগুলো চামড়া তেমন একটা ভালো দামে বিক্রি করতে পারেনি। জেলা পর্যায়ের মাদ্রাসাগুলো আরও কম দাম পায়।