শেষ সময়ে ক্রেতা কম স্বাস্থ্যবিধিতে মহাধ্বস
রনি ইমরান (পাবনা):
মাত্র কয়েক ঘন্টা পরে দেশে পবিত্র ঈদুল আযহা পালিত হবে । শেষ সময়ে পাবনার হাটগুলোতে আমদানি থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা কমে গেছে। গবাদি পশু নিয়ে আসা বিক্রেতাদের চরম হতাশা ভারী হচ্ছে। পাবনা শহরের হাজির হাটে আজ মঙ্গলবার দুপুরে কোরবানি পশুর প্রচুর আমদানি দেখা যায়। সেতুলনায় বিক্রি কম। শহরের বাসিন্দা সুজন একটা বড় ছাগল কিনলেন ১৬ হাজার টাকায় অথচ এরকমের ছাগল গতদিন বিক্রি হয়েছে ২০ হাজার টাকার উপরে বলে জানায় স্হানীয় ব্যবসায়ী আহম্মেদ খান। গরু বিক্রি করেতে প্রায় আধা ঘন্টা কোনো ক্রেতার দেখা পায়নি খামারি হাসিব শেখ। তিনি বলেন আজকে হাটে ক্রেতা কম। হাট কতৃপক্ষ মাস্ক পড়া ও সামাজিক দূরুত্ব নিশ্চিত করতে বললেও তা মানছে না কেউই।
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর উত্তরবঙ্গের বৃহৎ কোরবানির পশুর হাট বাড়ানো হয়েছে কয়েকদিন।এই হাটে গরু, ছাগল, ভেড়ার প্রচুর আমদামি ছিল। পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে স্থানীয় ক্রেতাদের পাশাপাশি দেশের দূর দূরান্ত থেকে অনেক ব্যাপারীরাও আসে এই হাটে কোরবানির পশু কিনতে। শনিবার দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, হাটে গরু ছাগল ভেড়ার আমদানিতে হাটের মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। ভাঙ্গুড়া, উপজেলার অষ্টমনিষা থেকে দুইটি ছাগল নিয়ে এসেছেন মধ্যবয়সী তোয়াব বিশ্বাস তিনি বলেন, আধা ঘন্টা হয়ে গেলো ক্রেতা আসেনি আর কিছুক্ষণ দেখে বাসায় ফিরবো। তিনি দুইটি মাঝারি আকারের ছাগল বিক্রি করবেন তার দাম হাঁকাচ্ছেন প্রতিটি ১২ হাজার করে। কিন্ত ক্রেতার দেখা মিলছে না। পাবনার দাশুড়িয়া থেকে ৪০ টি ছাগল হাটে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী নূর মোহম্মদ তিনি বলেন, আজকে আমদানি অনেক বেশি এতো ছাগল নিয়ে চিন্তায় আছি। ছাগলের পাশাপাশি ভেড়ার আমদানিও ছিল বেশ। চলনবিল এলাকার তরুণ মহসিন একটি ভেড়া বিক্রি করবেন,ভেড়াটির দাম চান ৮ হাজার টাকা সেখানে এক ক্রেতা ভেরাটি ৬ হাজার টাকায় কিনে নিতে চায় কিন্তু মহসিন শেষ পর্যন্ত তা দিতে রাজি হয়নি বলছিলেন, মোঃমহসিন।
পাবনা সদরের আরিফপুর হাজিরহাট, টেবুনিয়া, পুষ্পপাড়া, ঈশ্বরদীর আওতাপাড়া, অরনকোলা, বেড়ার চতুর হাট, কাশিনাথপুর, চাটমোহরের রেলবাজার, ভাঙ্গুড়ার শরৎনগরসহ বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায় নানা দামের,কোরবানির পশু উঠেছে। কিন্তু বিক্রেতারা ক্রেতা সংকটে দিশেহারা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটে অবস্থানের পর বিক্রি না হওয়ায় পশু নিয়ে আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
অধিকাংশ মানুষের মুখে নেই মাস্ক নেই স্বাস্হ্যবিধি মানার প্রবণতা।হাটগুলোতে স্বাস্হ্যবিধিতে নামে ধ্বস।
পাবনা জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মখলেছুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, করোনা মহামারির এই কঠিন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ১৯টি শর্ত পূরণ করে পশুর হাট পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাবনা জেলায় এ বছর ২৬টি পশুর হাটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি হাট কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেউই তা মানছে না।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি হাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া, ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে বিধিনিষেধ মেনে যেন হাট পরিচালনা হয়।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, মানুষের অসচেতনতার কারণে করোনা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।