শিরোনাম

South east bank ad

আটোয়ারীতে নায়ক রহমানের ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপন

 প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মাসুদ রানা (আটোয়ারী):

নায়ক রহমানের ১৬তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আটোয়ারীতে আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নায়ক রহমান স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, আটোয়ারীর উপজেলা কমিটির আয়োজনে রবিবার(১৮ জুলাই) বিকেলে আটোয়ারী উপজেলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নায়ক রহমান স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী। নায়ক রহমান স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও আটোয়ারী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ ইউসুফ আলীর সঞ্চালনায় পরিবারের পক্ষ থেকে নায়ক রহমানের স্মৃতিচারন করে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ খলিলুর রহমান। আরো স্মৃতিচারন মুলক বক্তব্য রাখেন আটোয়ারী আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ এম.এ মান্নান, আটোয়ারী প্রেসক্লাবের সভাপতি জিল্লুর হোসেন সরকার, উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি দবিরুল ইসলাম, সাধারন সম্পাদক জাহেরুল ইসলাম, ইউসুফ সরকার প্রমুখ। আলোচনা সভার আগে নায়ক রহমানের গ্রামের বাড়ি রসেয়া জামে মসজিদ গোরস্থানে কবর জিয়ারত করা হয়। বক্তরা কিংবদন্তি এই মহা নায়কের স্মরনে জাতীয়ভাবে তার মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপনের আহবান জানান। বক্তারা বলেন, ষাটের দশকের বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি নায়ক রহমানের পুরো নাম আব্দুর রহমান। সাদা কালো যুগের সুপার হিট ‘ জোয়ারভাটা’। এই সিনেমার জুটি ছিলেন শবনম। পরে একই জুটির রঙ্গিণ ছবি ‘ আমার সংসার’। সেই সময়ের সব সেরা রোমান্টিক জুটি ছিলেন তারা। বাংলা ও উর্দু ভাষায় চলচ্চিত্রের দাপুটে জুটিও ছিলেন তারা। বাংলাদেশের সিনেমায় বিশেষ অবদান রাখা এই মানুষটি মহানায়ক আব্দুর রহমান ১৯৩৭ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রসেয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেই সময় কোন মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারের কেউ অভিনয় করবে ভাবাই যেতো না। ১৯৫৭ সালে ২১ বছর বয়সে সিনেমার টানে বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় আসেন রহমান।ঢাকায় এসে খুজে বের করেন আরেক কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্যাপ্টেন এহতেশামকে ( আবু নূর মোহাম্মদ এহতেশামুল হক)। তার পরিচালিত ‘এ দেশ তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। ছবিটি ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায়। তারপর একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন। ১৯৬৭ সালে ‘দর্শন’ চলচ্চিত্রটি নির্মানের মাধ্যমে পরিচালনায় আসেন তিনি। এগুলোর মধ্যে ১৯৮১ সালে দীলিপ বিশ্বাস পরিচালিত ‘অংশীদার’ চলচ্চিত্রটি কালজয়ী হয়ে আছে। তার পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র হলো ‘দর্শন’, ‘কঙ্গন’, ‘ যাহা বাজে সেহনাই’ ইত্যাদি। আর বাংলা চলচ্চিত্র ‘ নিকাহ’। তিনি উর্দু চলচ্চিত্র ‘চাহাত’, ‘দোরাহা’, ও ‘ লগান’-এ অভিনয় করেন। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো উপন্যাসের চলচ্চিত্রায়ন ‘দেবদাস’ নির্মাণ করেন। সেখানে নায়ক রহমান চুনি লালের চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮১ সালে দিলীপ বিশ্বাস পরিচালিত ‘ অংশীদার’ চলচ্চিত্রেও তিনি দুর্দান্ত অভিনয় করেন। রহমান অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র ছিল অশোক ঘোষ পরিচালিত ‘আমার সংসার’। মাসুদ চৌধুরী পরিচালিত ‘ প্রীত না জানে রীত’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে গিয়ে সিলেটে গাড়ী দুর্ঘটনায় তিনি একটি পা হারান। এ দুর্ঘটনায় পা হারানোর পর রহমানের ক্যারিয়ার থমকে যায়। বাংলা, উর্দু ও পশতু ভাষায় চলচ্চিত্রে সমানভাবে জনপ্রিয় অভিনেতা রহমান অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো উর্দুতে ‘চান্দা’, ‘তালাশ’, ‘মিলন’, ‘বাহানা’, ‘ ইন্ধন’, ‘দর্শন’, ‘জাহাঁ বাজে সেহনাই’, ‘গোরি’,‘প্যায়াসা’, কঙ্গন’, ‘দোস্তি’, ‘নাদান’। বাংলায়: ‘এ দেশ তোমার আমার’, ‘রাজধানীর বুকে’, ‘ এই তো জীবন’, ‘ হারানো দিন’, ‘ যে নদী মরু পথে’, ‘দেবদাস’ কিংবদন্তি অভিনেতা রহমান ২০০৫ সালে চলে যান না ফেরার দেশে। আলোচনা সভা শেষে নায়ক রহমানের বিদেহী আত্মার শান্তি সহ দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোঃ আব্দুল গফুর।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: