ভোর হতেই পাখীদের জন্য ছুটে আসে সমর
রনি ইমরান (পাবনা):
পাবনা শহরে ভোরের আলো ফুটতেই শতশত ক্ষুধার্ত শালিক কিচিরমিচির শুরু করে। করোনাকালে জনশূন্য শহরে পাখীদের খাবার দিতে ছুটে আসে সময় কুমার ঘোষ।
হাজারো শালিকের ঝাঁক খাবরের জন্য ভীর করে সমরের মিস্টির দোকানের সামনে।এ সময় ঝুড়িভাজা নিয়ে দোকানের সামনে আসতেই শালিকের ঝাঁক তাকে ঘিরে ফেলে। তখন পরম মমতায় পাখীদের খাবার দেয় সমর।
প্রায় এক দশকের বেশী সময় ধরে শালিকের জন্য সকালে খাবারের আয়োজন করেন সমর ঘোষ। করোনায় রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকলেও নিয়ম করে সমরের অপেক্ষাতেই চেয়ে থাকে এই পাখিগুলো। সন্তানের মত আগলে রাখা পাখিগুলোকে কখনোই হতাশ করেন না সমর। করোনার ঝুঁকি থাকলেও এই ঘরবন্দি দিনগুলোতে কেবলই শালিকের জন্য খাবারের ব্যবস্থা অব্যাহত রেখছেন তিনি। এই পাখী প্রেম তাকে এনে দিয়েছে সরকারি বেসরকারি অনেক পুরুষ্কারও। তবে পুরুষ্কারের আসায় নয় তার সাথে এসব পাখীদের রয়েছে নিবিড় ভালোবাসার সম্পর্ক বলে জানায়, সমর ঘোষ তিনি বলেন এসব পাখীরা আমার সন্তানের মত। পাখীরা অবুঝ পাখীরাতো করোনা বোঝেনা। ক্ষুধার্ত এসব পাখীদের খাবার দিতে তাই প্রতিদিন ছুটে আসি। দীর্ঘ এ যুগেরও বেশী সময় ধরে আমি ভোরের আলো ফুটতেই পাখীদের খাবার দিতে উঠে আসি। আমি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে একটি দিনের জন্যও খাবার দেওয়া বন্ধ করিনি। প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ কেজি চানাচুর খায় এসব শালিক। সমর ঘোষ আরো বলেন, ওরা খাবারের জন্য তার পথ চেয়ে থাকে। করোনা ভাইরাস কী, কেন বন্ধ সব কিছু-এসব তো ওদের জানা নেই। ওরা খাবারের জন্য এসে ফিরে যাবে এটা ভাবতেই কষ্ট হয়। তাই ঝুঁকি থাকলেও ওদের মায়াতেই খাবার দিতে আসা। ওরা আমায় চেনে না। কিন্তু ওরা জানে, প্রতিদিন সকালে সেখানে খাবার পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বেতারের জেলা প্রতিনিধি সুশীল কুমার তরফদার বলেন,পাখীদের প্রতি এমন ভালোবাসা সত্যিই অপূর্ব। কয়েক বছর ধরে দেখছি এসব পাখীদের খাবার দিতে। পাবনা শহর এখন পাখীদের অভয় অরণ্য।