চুরির অপবাদে মধ্যযুগীয় কায়দায় যুবককে পেটালেন কাউন্সিলর
কায়সার সামির (মুন্সিগঞ্জে):
মুন্সিগঞ্জে স্বর্ণ চুরির অপবাদে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাদবর ও মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার সকালে মুন্সিগঞ্জ শহরের দক্ষিন ইসলামপুরে এঘটনায় ঘটে।
মারধরের ঘটনায় একইদিন রাতে ভুক্তভোগী যুবক মুরাদ হোসেন রনি বাদী হয়ে আওলাদসহ অপর দুজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অপর অভিযুক্তরা হলেন দক্ষিণ ইসলাম এলাকার মনির হোসেন ও কালাই হোসেন। এদিকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে জেলা জুড়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় মনির হোসেনের বাড়ি থেকে ৪ ভরি স্বনালঙ্কার ও ২২ হাজার টাকা চুরি হয়। সে ঘটনায় সোমবার(১২ জুলাই) সকালে চুরির অপবাদে মনিরের প্রতিবেশি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনসহ মনির হোসেন ও তার ভাই কালাই। পরে মনিরের বাড়ির উঠানে রনিকে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন আওলাদ। তবে মারধরের পরও চুরির বিষয়ে অস্বীকার করেন রনি। পরে রনির ছোট ভাই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে আসলে পুলিশের কাছে কাছে রনিকে সোপর্দ করে মারধকারীরা। এরমধ্যে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আপলোড করা হলে রাতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে তৈরি হয় সমালোচনার জড়।
ভুক্তভোগী রনি জানান, সকালে আমরা বাসায় আইসা কাউন্সিলর আওলাদ জিজ্ঞাসার কথা বলে আমাকে মনিরদের বাড়িতে নিয়া যায়। সেখানে নিয়া আমারে হাত-পায়ে বান দিয়া মারে আর বলে চুরির কথা স্বীকার করতে। আমিতো স্বর্ণ নেই নাই, আমি কেন শিকার করমু। পরে আমার ছোট ভাই পুলিশ নিয়া আসলে আমারে ছাইরা দেয়। কারা যেনো ফেইসবুকে ভিডিও দিছে। রাতে আবার পুলিশ আসলে আমি বাদী হয়ে কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন সহ মনির হোসেন ও কালাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি। আমারে শুধু শুধু মারধর করছে আমি এর বিচার চাই।
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন বলেন, আমি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসিনি। মনিরদের বাড়িতে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে এটি জানতে পেরে আমি সেখানে যাই। গিয়ে দেখি অনেক মানুষ সেখানে যাই। পড়ে তাকে দু তিনটি বারি দেই। পুলিশ আসলে চিকিৎসা করানোর কথা বলি। বিষয়টি আমরা ভুল হয়েছে। মারধরের আধিকার আমার নেই, আমি অনুতপ্ত।
সে যে চুরি করেছে প্রমাণ পেয়েছেন এমন প্রশ্নে কাউন্সিল বলেন, না চুরির প্রমাণ পাইনি।
এবিষয়ে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ মিনহাজ-উল-ইসলাম জানান, মারধরের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। কালাই ও মনির নামের দুজন গ্রেফতার আছে।