শিরোনাম

South east bank ad

ঝালকাঠিতে হস্তান্তরের ছয় মাসেই ভেঙে পড়লো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

 প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মোঃ রাজু খান (ঝালকাঠি):

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় ধানসিড়ি নদী পাড়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প ২ এর একটি ঘর হস্তান্তরের তিন মাসেই ভেঙ্গে পড়েছে। গত পনেরদিন আগে থেকে এ ঘরের পিছন অংশে ফাটল দেখা দিলেও শুক্রবার হঠাৎ করে এই প্রকল্পের ৪২নং ঘরের পিছন অংশ বারান্দাসহ ধ্বসে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হবার আগেই জনৈক রফিক লোকজন নিয়ে ভাঙ্গা চাড়া অংশ সরিয়ে ফেলেন। প্রকল্পে ঠিকাদারেরা নন, সরাসরি সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রেরিত অনুসরণীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ সুবিধা ভোগী ও স্থানীয়দের। তাদের অভিযোগ, ঘরের ভিটিতে মাটি ও নির্মাণ কাজে সিমেন্টের অংশ কম দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্প ২ এ নির্মিত ধানসিড়ি নদী পাড়ে সরকারী জায়গায় নির্মিত এই প্রকল্পে ১৪টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। শুরু থেকেই স্থানীয়রা ও সুবিধাভোগীদের পক্ষ থেকে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করা হলেও গুরুত্ব দেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় পর্যায়ে খরচ হয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার টাকায় প্রকল্পের এই ঘরগুলোতে ইট, বালুসহ সিমেন্টের গুনগত মান ঠিক না রেখেই কাজ শেষ করে এপ্রিল মাসে সুবিধা ভোগীদের কাছে হস্তান্তর করে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও ঘরের আড়া ও টিনের ছাউনির নিচে শিলকড়ই কিংবা ভাল মেহগনী কাঠ ব্যবহার করার কথা থাকলেও স্থানীয় নিম্নমানের রেইনট্রি কিংবা চাম্বল কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই প্রকল্পের ১৪টি ঘরের প্রায় আটটি ঘর ইতিমধ্যেই সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরের মেঝে ফেটে গিয়ে গর্তে পরিণত হয়েছে,কয়েকটি ঘরের সামনের পিলার ভেঙ্গে পড়েছে, দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ছে, টিনের ছাউনি দিয়ে ভেতরে পানি প্রবেশ করছে, দেয়াল ফেটে গিয়েছে, জানালা খুলে পড়ে যাচ্ছে। পা রাখার কোনো সিঁড়ি নেই। খসে পড়ছে অনেক দেওয়াল ও বারান্দার খুঁটির আস্তর। বৃষ্টি হলে ঘরের চালা দিয়ে পানি পড়ে। এখন পর্যন্ত বাসানো হয়নি টিউবওয়েল সব মিলিয়ে সুবিধাভোগীদের দুহড়র্ভোগের শেষ নেই।

এই প্রকল্পের বাসিন্দা সুবিধাভোগী মমতাজ বেগম বলেন, আমাগো কিছু নাই দেইখ্যা প্রধানমন্ত্রী আমাগো একখান ঘর দিছে, কিন্তু ঠিকাদারের কাজের মান খারাপের কারনে ঘরের যে অবস্থা যে কোন সময় ভাইঙ্গা মাথার উপর পড়তে পারে। পরশুদিন ৪২নং ঘর ভাইঙ্গা পড়ার পর হইতেই আমরা আতঙ্কে আছি। আর এক বাসিন্দা আ. রহিম বলেন, এতদিন এদিক ওদিক থাকার পর মাথা গেঁাজার একটু ঠঁাই পাইলেও মাত্র তিন মাসে ঘরের বিভিন্ন জায়গা ফাটল ধরে ভাঙ্গা শুরু হইছে, মনে হয় আর তিন মাস পর এই ঘরে আর থাকার অবস্থা থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই সুন্দর উদ্দোগকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাচ্ছে তাদের বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনিরসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ইউএনও নিজেই সবকিছু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ ও বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে তাদের সম্পৃক্ত করা হয়নি।

এ ব্যাপারে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোক্তার হোসেন বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হবার পর অমরা জেনেছি এই ৪২নং ঘরের নীচে একটি ডোবা ছিল তাই আমরা ঘরটি কোন সুবিধা ভোগীকে হস্তান্তর করিনি। এরইমধ্যে ঘরটির পিছনের অংশ ডেবে গিয়ে ধ্বসে পড়ায় আমরা নতুন করে ধানসিড়ি নদীর ঐ জায়গায় পাইল বসিয়ে আবার সংস্কার শুরু করেছি। সংস্কার শেষ হলে একজন সুবিধা ভোগীর মাঝে ঘরটি হস্তান্তর করা হবে। এছাড়াও আমরা প্রকল্পের প্রত্যেকটি ঘর পরিদর্শন করে যদি মেরামতের দরকার হয় তাহলে আমরা সেগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করব।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: