পাবনায় ভয়াবহ সংক্রমণ : সর্বোচ্চ ২৪৪ জন আক্রান্ত
রনি ইমরান (পাবনা): সংক্রমণ অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে পাবনার শহর থেকে অজপাড়া গাঁয়ে। প্রতিদিনই আক্রান্তের নতুন রের্কডে ভয়াবহ করে তুলছে পাবনার করোনা পরিস্থিতি। গত ২৪ ঘন্টায় পাবনায় ২৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্হ্যবিভাগ। এর মধ্যে ঈশ্বরদীতে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নতুন আক্রান্ত ১৮৪ জন। এছাড়া পাবনা সদরে ৩১ জন,আটঘরিয়ায় ১জন,চাটমোহরে ৩ জন ভাঙ্গুড়ায় ৬ জন, ফরিদপুরে ২ জন সাথিয়ায় ৭ জন,বেড়ায় ৬ জন ও সুজানগরে ৪ জন। জেলায় সংক্রমনের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৭ শতাংশ। লকডাউনে পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্র জনশূন্য হলেও শহরের বেশিরভাগ এলাকার রাস্তার অলিগলিতে বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি । মানুষ স্বাস্হ্যবিধি সম্পর্কে চরম উদাসীন বলেই সংক্রমণ বড়ছে জানায় জেলা স্বাস্হ্যবিভাগ। লকডাউনে মানুষ শহরে দোকান,অফিস,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধে করে এলাকায় এসে জটলা করে আড্ডায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে । শহরের চেয়ে গ্রামের অবস্থা আরো উদ্বেগজনক। গ্রামের বেশীরভাগ মানুষই সচেতন নয় এবং স্বাস্থ্যবিধিতে চরম অনীহা বেশ লক্ষণীয়। তাদের মধ্যে মাস্ক পড়ার প্রবণতাটাও কম। তারা একসাথে চায়ের দোকানে গাদাগাদি করে আড্ডা দিচ্ছে। ছোট বাজার ও দোকানগুলোতে বাজার সদাই কেনাবেচায় ভীর করছে।মানুষের অসচেতনতায় করোনা সংক্রমণের ঝূঁকি ক্রমেই বাড়ছে। পাবনা শহরের আশেপাশে গ্রামগুলোতে ছোট বড় কয়েকটি ঔষুধের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে ঠান্ডা,সর্দিকাশি, জ্বরের ঔষুধের প্রচুর চাহিদা বেড়ে গেছে। অনেকের মাঝে করোনার সবগুলো উপসর্গ থাকলেও সাধারণ ঠান্ডা জ্বর ভেবে করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা থেকে তারা অনেক দূরে সরে আছে। চরম শংকা আর উদ্বেগের বিষয় হলো, বাহক জ্যামিতিক হারে সমাজের অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে দিচ্ছে ভাইরাস। পাবনা শহরের পাশেই হিমায়েতপুর ইউনিয়ন দোকানে একসাথে গাদাগাদি করে চা খাচ্ছিলেন কয়েকজন গ্রামবাসী। তাদের কারো মুখে মাস্ক ছিলনা। করোনা বিষয়ে তাদের ধারনা হলো এই অসুখটি তাদের কিছুই করতে পারবেনা। কেউ বলছে, আমরা সারাদিন পরিশ্রম করি, শরীর খেটে খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করি করোনা আমাদের হবেনা। এটা বড়লোক মানুষের হয়। স্হানীয় বাসিন্দা মজনু মিয়া বলেন, এসব সর্দি জ্বর প্রতি বছরই তো হয় এটা তেমন কিছু নয়। একই গ্রামের সূরুজ হোসেন জানায়,আমার গত কয়েকদিন যাবত জ্বর ঠান্ডা ছিল কিছুদিন ভোগার পর এমনিতেই সেরে গেছে। এ বিষয়ে সর্তক করে দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছে গ্রামের মানুষের এমন ধারণয় বাড়বে সংক্রমণ, সংক্রমণের দিক দিয়ে হটস্পট হয়ে উঠবে পাবনা। তাদের সচেতন করতে সামাজিক উদ্যোগ এর বিকল্প নেই।পাবনা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে সাবেক উপ-পরিচালক ডাঃ রাম দুলাল ভৌমিক মনে করেন, করোনা প্রতিরোধে সামাজিক জাগরণ দরকার। এই মহামারি পরিস্থিতিতে
মানুষ যদি নিজ থেকে সচেতন না হয় তাহলে সঙ্কট আরো বাড়বে।জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্র থেকে জানা যায় গ্রামের মানুষ করোনা পরিক্ষা করাতে চায়না। তাই তাদের শনাক্ত কম। সামাজিক ভাবে মানুষকে সচেতন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাস্তা বাজার অলিগলিতে কেউ যেনো জটলা ভীর গেদারিং না করে তা তদারকিতে স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেখভাল করার আহবান জানানো হয়েছে। কিন্তু সামাজিক ভাবে মানুষকে সচেতন করার এসব পদক্ষেপ এখনো বাস্তবে তেমন দেখা যায়নি। সংক্রমণ বড়ছে মানুষ যত বেশী অসচেতন হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা ততোই বাড়ছে। বাংলাদেশ বেতারের পাবনা জেলা প্রতিনিধি সুশীল কুমার তরফদার বলেন, সকলকেই নিজের জন্য পরিবারের জন্য সমাজের জন্য সচেতন হতে হবে।