বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী : প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি যথেষ্ট শক্তিশালী। মহামারির সময়েও আমরা অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি। যদিও এর নেতিবাচক প্রভাব আমাদের অর্থনীতির ওপর পড়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সময়োচিত নানাবিধ ব্যবস্থা নিয়েছি। করোনাভাইরাসের ফলে আমাদের আমদানি-রফতানিসহ অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। বিভিন্ন সেক্টরে এর প্রভাব দেখা দেয়। এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিই।
প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ২০১৯-২০২০ এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাসজনিত কারণে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক এক হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ সময় অর্থনৈতিক অভিঘাত থেকে উত্তরণে আমরা ১৫.২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা সংগ্রহসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীদের পাশে পেয়েছি। মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ ও প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ২০১৯-২০ ও ২০২০-২১ অর্থবছরে ২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা ঋণ পেয়েছি। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা আমরা পেতে যাচ্ছি। এর পাশাপাশি টিকা কিনতে ভ্যাকসিন সাপোর্ট বাবদ আরও ২ বিলিয়ন ডলার সহায়তার আশ্বাস পেয়েছি। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সহায়তা পাওয়া সহজ হয়েছে। বিপুল বৈদেশিক সহায়তা প্রদানের জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০২১-২১২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯-এ সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে আমরা আগেই একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়েছি। সব পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নের কাজ আমরা গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছি। আমাদের প্রণোদনা প্যাকেজগুলো অত্যন্ত সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে চলছে। ২৩টি প্যাকেজের এক লাখ ২৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকার বিপরীতে মে ২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হার ৭১.৫০%। এ পর্যন্ত ৬ কোটি ৫ লাখ ব্যক্তি এবং এক লাখ ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান সরকারের এসব উদ্যোগের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হয়েছে। প্যাকেজ কার্যক্রম থাকায় এই সংখ্যা সামনে আরও বাড়বে। বাজেট বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনসহ আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন চাই। আমরা প্রবৃদ্ধি চাই। আবার সমাজের দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ঘটাতে চাই। প্রবৃদ্ধির সুফলটা যেন তৃণমূলের মানুষ পায় ।