ওসি পদায়ন : ‘হঠাৎ’ হাতে পৌঁছাচ্ছে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের চিঠি
পদায়নের আগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও জানতে পারছেন না তার নতুন কর্মস্থল ও দায়িত্ব সম্পর্কে। ‘হঠাৎ’ হাতে পৌঁছাচ্ছে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের চিঠি। তাই এটাকে ‘চমক’ হিসেবেই আখ্যায়িত করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। আগে থেকে বদলি ও পদায়নের ব্যাপারে কোনো আলোচনা না থাকায় রাজনৈতিক তদবিরের কোনো সুযোগ থাকছে না। বর্তমান পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এই পদ্ধতিতে ওসি পদায়নের ফলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন সুধীমহলের।
বদলি বাণিজ্য, তদবির ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে বিভিন্ন থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদায়নে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট জেলা পুলিশ। পরিদর্শকদের মেধা, বুদ্ধিমত্তা, সার্ভিস রেকর্ড, অতীত অভিজ্ঞতার মানদণ্ড পর্যালোচনা করে সিলেট জেলা পুলিশের আওতাধীন থানাগুলোতে চলছে ওসি পদায়ন।
গেল দুই বছরে সিলেট জেলা পুলিশের আওতাধীন সবকটি থানায় নতুন ওসির পদায়ন হয়েছে। যোগদানের পরই সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তবর্তী কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও জকিগঞ্জ থানায় নতুন ওসি পদায়ন করেন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। জেলার চৌকস কর্মকর্তাদের (পরিদর্শক) সীমান্তবর্তী থানাগুলোতে পদায়ন করায় কমে আসে চোরাচালান ও মাদক পাচার। এসব থানায় যোগদানকারী ওসিরা আগে থেকে জানতেন না তাদের পদায়নের কথা।
সর্বশেষ গত ২২ জুন গোয়াইনঘাট থানার ওসি হিসেবে পদায়ন হয় ফেঞ্চুগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পরিমল দেব। নতুন কর্মস্থলে যোগদানের আগে তিনি জানতেই পারেননি তাকে গোয়াইনঘাটের ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বিশ্বনাথ থানায় গাজী আতাউর রহমান ও বালাগঞ্জে নাজমুল ইসলাম ওসি হিসেবে পদায়ন পেয়েছেন। অথচ এ দু’জনই তাদের পদায়নের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না। দাপ্তরিক কাজে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসে তারা পোস্টিংয়ের বিষয়টি জানতে পারেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, বর্তমান আইজিপি পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছেন। তাই অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বন্ধে বদলি ও পদায়নে স্বচ্ছতা আনা হচ্ছে। তাই থানায় ওসি নিয়োগ নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ না ওঠে সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শক্রমে স্বচ্ছতার সাথে বদলি ও পদায়নের কাজ চলছে।