বিধিনিষেধ মানাতে পুলিশ-বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা ভাবছে সরকার
যেকোনো মূল্যে অকারণে মানুষের বাইরে বের হওয়া ঠেকাতে সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক রূপ নেয়ায় প্রাথমিকভাবে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই লকডাউনের বিধিনিষেধ জনসাধারণকে মানাতে পুলিশ-বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা ভাবছে সরকার।
শুক্রবার রাতে সরকারি তথ্য বিবরণীতে এক সপ্তাহের লকডাউনের কথা জানানো হয়। আগামীকাল এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
করোনা সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী বেশ কিছু জেলায় বিধিনিষেধ দেয়া হয়। ঢাকার আশপাশের সাত জেলাতেও বিধিনিষেধ চলছে গত মঙ্গলবার থেকে। এতেও করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হতে থাকায় সারাদেশে শাটডাউনের সুপারিশ করে করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার তারা সারাদেশ ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশের কথা জানায়।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রাতে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এই লকডাউন বাস্তবায়নে সরকার কঠোর হবে। পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মাঠে থাকবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে মানার জন্য পুলিশ থাকবে, বিজিবি থাকবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও থাকতে পারে।’
ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সোমবার থেকে সাত দিন এ কঠোর লকডাউন চলবে। এরপর প্রয়োজন মনে করলে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়ানো হবে।’
বিধিনিষেধের মধ্যে সব সরকারি ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। তবে বাজেটের কাজে সহযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক শাখা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ কয়েকটি অফিস আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত খোলা থাকবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধকল্পে আগামী সোমবার ২৮ জুন থেকে পরবর্তী সাত দিন সারাদেশে কঠোর লকডাউন পালন করা হবে। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। গণমাধ্যম এর আওতা বহির্ভূত থাকবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আদেশ আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে ওই মাসের শেষ দিকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কয়েক মাস কার্যত অচল থাকে গোটা দেশ। পরে সংক্রমণ আস্তে আস্তে কমতে থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া প্রায় সব কিছুতেই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে করোনা পরিস্থিতির আবার অবনতি হতে থাকে। এপ্রিলের শুরুতে সরকার দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। টানা কয়েক সপ্তাহ চলার পর সংক্রমণ কমে আসায় বিধিনিষেধও শিথিল করা হয়।