কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯ মাস যাবত আটকে আছে ফলাফল
এইচ এম জোবায়ের হোসাইন:
দীর্ঘ ১৯ মাসেও একটি সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল দিতে পারেনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (ইএসই) বিভাগ। পরীক্ষার তিন মাসের মধ্যে ফল দেওয়ার কথা থাকলেও এতদিন ফল আটকে আছে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের কারণে।
এ বিষয়ে বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আশরাফ আলী সিদ্দিকীর অভিযোগ করেন ‘পরীক্ষা কমিটির সদস্য শিক্ষকরা আমাকে সহযোগিতা করছেন না। বারবার বলার পরও শিক্ষক এফ কে সায়মা তানজিয়া অভ্যন্তরীণ নম্বর জমা দেননি। পরীক্ষা কমিটির সভায় হাজির হন না আরেক শিক্ষক। তাদের কারণেই ফল আটকে রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে সম্প্রতি ওই শিক্ষক নম্বর জমা দিয়েছেন। এখন দ্রুত ফলাফল দেওয়া হবে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে সায়মা তানজিয়া বলেন, ‘আমি অনেক আগে নম্বর জমা দিয়েছি। বিভাগের প্রধান আমাদের হয়রানির জন্য এমন অভিযোগ করছেন। তিনি তো সব কমিটিরই সভাপতি, তার বাইরে কেউ কিছু বলতে পারে না। তার কারণেই আমরা ঠিকঠাক কাজ করতে পারি না।’
সংশ্লিষ্টরা জানান, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে তৃতীয় বর্ষের শেষ সেমিস্টার পরীক্ষা ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে ২৮ অক্টোবর শেষ হয়। পরীক্ষার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে ফলাফল দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলাফল দেরিতে করোনার অজুহাত দাঁড় করালেও তা সঠিক নয়। কারণ করোনা সংকটে বিশ্ববিদ্যালয় যখন বন্ধ ঘোষণা হয়, তখনই পরীক্ষার পর পাঁচ মাস পার হয়েছিল।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিভাগে শিক্ষকদের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। তাদের দ্বন্দ্বে একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব মেটাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কমিটি করেও সফল হয়নি। এরপর শিক্ষার্থীরা প্রশাসন বরাবর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
ফলে একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ফলাফলও দেড় বছর আটকে রয়েছে। ফল না পাওয়ায় পরের সেমিস্টার পরীক্ষায় বসতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. নির্মল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘আমাদের দপ্তর হলো ডাকঘর। এখানে কিছু আটকে থাকে না। বিভাগে দেরি হলে আমাদের কিছু করার থাকে না।’
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ফল প্রকাশে এত দেরির সুযোগ নেই। কেন এটি ঘটেছে, তা আমরা খতিয়ে দেখব। শিক্ষকদের গাফিলতি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। সব সমস্যার সমাধান অনলাইনে করা যায় না। শিক্ষকদের ঝামেলা মিটিয়ে দ্রুত ফল প্রকাশের ব্যবস্থা করা হবে।’
p