২২ বছর পূর্ণ করেছে দেশের তৃতীয় প্রজন্মের ব্যাংক মার্কেন্টাইল ব্যাংক
বেসরকারি খাতের মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২৩ বছরে পদার্পণ করছে আজ। ২২ বছর পূর্ণ করেছে দেশের তৃতীয় প্রজন্মের ব্যাংক মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড। ১৯৯৯ সালের ২ জুন ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন মরহুম আব্দুল জলিল।
এ উপলক্ষ্যে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, গ্রাহকদের সর্বাধুনিক ব্যাংকিং সেবা দিতে মার্কেন্টাইল ব্যাংক তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নিয়মিত বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। ব্যাংকের ব্যয় ও ঝুঁকি কমাতে এবং গ্রাহকদের উন্নত সেবা দিতে বেশ আগেই সব শাখার কার্যক্রম কম্পিউটারাইজড করা হয়েছে। গ্রাহকদের রিয়েল টাইম অনলাইন সুবিধা দিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার টেমোনস টি-২৪ এর সর্বশেষ ভার্সন আর-১৯ আপগ্রেডেশনের কাজ চলছে। যুগোপযোগী এবং উন্নত গ্রাহক সেবা দিতে মোবাইল অ্যাপ ‘এমবিএল রেইনবো’ চালু করা হয়েছে।
মূলধন পর্যাপ্ততা, মানসম্পন্ন সম্পদের বৃদ্ধি, সুষম আয়, মজবুত তারল্য ক্ষমতা ও ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপের কারণে মার্কেন্টাইল ব্যাংক সফলতা লাভ করেছে। পাশাপাশি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বিচক্ষণ নীতি ও সিদ্ধান্ত, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস এই সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে তিনি মনে করেন। করোনা মহামারির মধ্যেও প্রায় সব সূচকে ভালো করেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় প্রত্যেক ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর অংশ হিসাবে মার্কেন্টাইল ব্যাংকেও মন্দ ঋণ আদায়ে পৃথক টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
আমানত বেড়ে গত ডিসেম্বর শেষে ২৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা হয়েছে। ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকায়। এই ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭ হাজার ২৭৭ কোটি টাকার আমদানি, ১৩ হাজার ৫৪১ কোটি টাকার রফতানি ও তিন হাজার ৮৯ কোটি টাকার রেমিট্যান্স এসেছে। মূলধন পর্যাপ্ততার হার ছিল ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। সব মিলিয়ে করোনার মধ্যেও গত বছর ৩৯৫ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা হয়েছে। নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২১৬ কোটি টাকা। যে কারণে ১০ শতাংশ নগদসহ শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকরা ঘরে বসেই ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, ক্রেডিট কার্ডের বিল, মোবাইল রিচার্জ, তহবিল স্থানান্তরসহ প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন। মাইক্যাশ নামে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সেবা ইতোমধ্যে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকদের নগদ উত্তোলন ও জমা সহজ করতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১৮৬টি এটিএম বুথ এবং ২০টি ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন স্থাপন করেছি। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১৫০টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে সম্প্রতি পাঁচটি উপশাখা খোলা হয়েছে। ২০২০ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ও ইসলামী ব্যাংকিং সেবা চালু করা হয়। ইতোমধ্যে ১০৮টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ও ৪৫টি ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোর মাধ্যমে সেবা দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছর চারটি নতুন শাখা ও ১৫টি উপশাখা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ক্রমান্বয়ে সব শাখায় সাধারণ ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং সেবা চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
করোনাকালে ব্যাংকের কর্মীরা গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিচ্ছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কর্মীদের নিয়মিত বেতন, উৎসব বোনাস, প্রফিট বোনাস, ইনক্রিমেন্ট, বৈশাখী ভাতা, প্রমোশনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রেখেছে। কর্মীদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে বিশেষ যত্ন নেওয়া, নিজস্ব চিকিৎসকের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়েছে।