প্রেম করায় স্কুল ছাত্রকে জবাই করে হত্যা করে ইউপি সদস্যসহ তার সহযোগীরা
রাসেল আহমেদ(ময়মনসিংহ):
ময়মনসিংহে সদর উপজেলায় মেয়ের সাথে প্রেম করায় স্কুল ছাত্র সৈকত হাসান আকাশকে (১৬) হত্যা করে ইউপি সদস্য জিয়াউল হকসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যা দায় স্বীকার করেন এবং তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
রবিবার (২৩ মে) দুপুর ২টার দিকে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আব্দুল হাই'র আদালতে আসামীদের তুলা হলে ১৬৪ দ্বারা জবানবন্দীকে হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি শাহ কামাল আকন্দ।
এর আগে শুক্রবার (২১ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অষ্টধর ইউনিয়নের ভুগলির জিয়াউল হকের বাড়ির পেছন থেকে মাটি খুড়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে ওই দিন রাতেই অষ্টধর ইউনিয়নের ভুগলি থেকে ইউপি সদস্য জিয়াউল হকের স্ত্রী রোজিনা আক্তার ও তার ভাইয়ের স্ত্রী নার্গিস আক্তারকে গ্রেফতার করে। জেলার মুক্তগাছা থেকে ইউপি সদস্য জিয়াউল রহমান, তার ভাই জুলহাস উদ্দিন, জিয়াউল হকের ছেলে নাজমুল হক, প্রেমিকা জেসমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে শনিবার (২২ মে) নিহত সৈকত হাসান আকাশের পিতা আকরাম হোসেন কেতোয়ালী মডেল থানায় ইউপি সদস্য জিয়াউল হককে প্রধান আসামী করে মোট ১৪ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি মাহ কামাল আকন্দ আরও বলেন, সদর উপজেলার অষ্টধর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জিয়াউর রহমানের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আকাশের। তারা দুজন পরিবারের অগোচরে গত ২ মে কোর্ট ম্যারেজ করে যে যার বাড়িতে ফিরে যায়।
কিন্তু বিষয়টি উভয় পরিবারের লোকজন জানতে পেরে বুধবার মেয়েটি ফোন করে আকাশকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে নেয়। এরপর থেকেই আকাশ নিখোঁজ ছিল।
এদিকে, ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আকাশের বাবা আক্রাম হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ শুক্রবার ইউপি সদস্য জিয়াউল হকের বাড়ি তল্লাশি করে। এ সময় জিয়াউল হকের ঘরের পাশে রক্তের দাগ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাড়ির চারপাশে খুঁজতে শুরু করে পুলিশ। জিয়াউর রহমানের ঘরের পেছনে খুঁড়ে রাখা মাটি দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের।
পরে সেই জায়গা খুঁড়ে আকাশ মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত সৈকত হাসান আকাশ উপজেলার অষ্টধর ইউনিয়নের ভুগলি মন্ডল বাড়ি গ্রামের মো. আক্রাম হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় অষ্টধার বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।