লকডাউনেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতির কারণে ১৪ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। সরকারের নতুন আদেশ অনুযায়ী এ সময় দেশের সব অফিস-আদালত, শপিংমল, দোকানপাট, হাট-বাজার বন্ধ থাকছে। বন্ধ থাকছে সবধরনের পরিবহন চলাচলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। এমন নির্দেশনার পরও মাঠে থাকছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের কোভিড- ১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে দেওয়া প্রথম লকডাউনের মতো এবারও বিভিন্ন সরকারি কর্মকাণ্ডের দুর্নীতি রোধে মাঠে থাকছে কমিশন। করোনার প্রতিকূল পরিবেশে স্বাভাবিক কার্যক্রম পুরো মাত্রায় অব্যাহত না থাকলেও দুর্নীতি প্রতিরোধে পাহারাদার হিসেবে জেগে থাকবে দুদকের গোয়েন্দা, অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ।
এ বিষয়ে দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুদক তার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। দুদক শুধু অফিসিয়াল কর্মকাণ্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। প্রতিষ্ঠানটির গোয়েন্দা বিভাগ, অনুসন্ধান ও তদন্ত বিভাগ রয়েছে। সেখানে নিয়োজিত কর্মকর্তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে যান। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই অনুসন্ধান ও তদন্তের কাজ থেমে থাকবে না। প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে যতটুকু সম্ভব দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে।
দুর্নীতিগ্রস্তরা যেকোনো দুর্যোগকালে দুর্নীতি ও অপকর্মে অধিকতর মনোনিবেশের সুযোগ গ্রহণ করে বিধায় দুদক সবসময় তাদের দায়িত্ব পালনের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা বিবেচনায় রাখে। তাই স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারের যাবতীয় নির্দেশাবলী প্রতিপালন করেই দুদক কর্মকর্তাগণ তাদের অনুসন্ধান, তদন্ত কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখবেন— বলেন দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।
২০২০ সালে আলোচিত মাস্ক কেলেঙ্কারি, করোনা টেস্ট জালিয়াতি, ত্রাণসামগ্রী আত্মসাৎ, চিকিৎসা জালিয়াতির মতো ঘটনা ঘটে। কোভিড- ১৯ এর প্রাদুর্ভাবের শুরুতে নকল মাস্ক ও পিপিই সরবরাহ, ভুয়া করোনা রিপোর্ট প্রদানসহ স্বাস্থ্য খাতে শত শত কোটি টাকা লোপাটের ঘটনাও আলোচিত। সে সময় প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করে অভিযান চালাতে হয়েছিল রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা দুদককে।
ঝুঁকিপূর্ণ এমন কাজে প্রাণ হারিয়েছেন দুদক পরিচালকসহ তিনজন। আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক মহাপরিচালক ও পরিচালকসহ মোট ১২৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ থেকেও রক্ষা পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ২১ কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে দুজন পরিচালক, চারজন উপপরিচালক, ছয়জন সহকারী পরিচালক এবং অন্যান্য পদের নয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।