ঘরোয়া কাজে নারীদের সহযোগিতা: মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, মুমিন নারী-মুমিন পুরুষ পরস্পর বন্ধু। (সুরা তওবা-৭১)। প্রেম-ভালোবাসা ও আন্তরিকতার আঁচল ধরেই বন্ধুত্বের সেতু রচনা হয়। বন্ধু একে অপরের প্রতি হৃদয়বান। পরস্পরে থাকে সহযোগিতার মনোভাব। নারী-পুরুষের পারিবারিক জীবনে সহযোগিতার মনোভাব আরও অপরিহার্য। আজকের উত্তরাধুনিক যুগের মায়েরা সাংসারিক দায়িত্বের সঙ্গে সঙ্গে নানা সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাজে অংশ নিচ্ছেন। সেই অংশ নেওয়াটা অর্থবহ করতে হলে সংসার পারস্পারিক সহযোগিতায় গড়ে উঠাতে হবে। প্রত্যেকেই তার স্বতন্ত্র স্বাধীন সত্ত্বার অধিকারী হয়ে বেঁচে যাবে। তা না হয় সংসার ভেঙে পড়বে।
বছরজুড়েই মায়েরা ঘর গোছায়, রান্না করে, খাবার পরিবেশন করে, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা- খাবার, গোছল ও স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। মেয়েরা সবার আগে বিছানা ছাড়ে, ক্লান্ত শরীরে ঘুমঘরে যায় সবার পরে। সাংসারিক এসব কাজে আমাদের পুরুষদের সামান্যতম অংশ নেই। কারও বেলায় ব্যতীক্রম তো বটেই। অথচ ইসলামের নবী মুহম্মদ (সা)-এর জীবনের চিত্র দেখুন। হজরত আয়েশা (রা)কে জিজ্ঞেস করা হলো- রাসুল (সা) ঘরে কী কাজ করতেন? প্রতি উত্তরে আয়েশা (রা) বলেনÑ রাসুল (সা) ঘরোয়া মানুষদের সেবায় নানা কাজে অংশ নিতেন। নামাজের সময় হলে বেরিয়ে যেতেন। (বোখারি শরিফ : ৫০৪৮)।
আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি ইবনে হিব্বানের সূত্রে বলেন- আয়েশা বলেছেন, রাসুল নিজের কাপড় সেলাই করতেন। জুতা মেরামত ও সাংসারিক যাবতীয় কাজে অংশ নিতেন। (ফতহুল বারী-১৩/৭০)।
আমাদের সমাজের পুরুষদের আরও দায়িত্ব সচেতন ও সহযোগিতার মনোভাব হওয়া জরুরি। প্রয়োজনে ঘরের কাজে মায়েদের সহযোগিতা করা বিশেষ করে রোজার মাসে মেয়েরা সব দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে, নানা স্বাদের ইফতার-সেহরি তৈরি করে। বিশাল ইফতার তৈরির আয়োজনে আমরাও অংশ নিই। কুরআন শরিফে বলা হয়েছে- তোমরা মঙ্গলময় কাজে প্রতিযোগিতা কর। (সূরা বাকারাহ : ১৪৮)।
রোজাদারকে খাওয়ানো, খাবার তৈরি, পরিবেশন সবই ইবাদত। সওয়াব অর্জনের বসন্তকাল রোজায় পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করেও সওয়াবের পাল্লা ভারী করতে পারি আমরা। তবে মায়েদের কাজের ব্যাপারে সুরা আল ইমরান ১৯৫নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিই। তোমাদের নারী-পুরুষের মঙ্গল কোনো কাজ বিনিময়হীন বিফল করি না। তোমরা একে অপরের সহযোগী।
লেখক : সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম