বহুমুখী সংকটের মুখে দেশের ট্যানারি শিল্প
দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ট্যানারি শিল্প বর্তমানে বহুমুখী সংকটের মুখে পড়েছে। মূলত ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কার্যকর না হওয়া, চুক্তি সম্পাদনে মালিকপক্ষের গড়িমসি, ঢালাও ছাঁটাই ও এ শিল্পকে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) অধীনে নেয়ার উদ্যোগের কারণে এসব সংকট তৈরি হয়েছে। রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে গতকাল ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ অভিযোগ করেন।
এ সময় ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ শিল্পে দুই শতাধিক ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এটি দেশের সবচেয়ে দূষণ সৃষ্টিকারী খাত। তার পরও শ্রমিকরা এর মধ্যেই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন, অথচ তাদের ন্যায্য পাওনা ও মজুরি থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
তিনি জানান, ট্যানারি শিল্পকে হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরকালে আধুনিক কারখানা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও এ শিল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। শ্রমিকদের কোনো দাবিই কার্যকর হয়নি। এ খাতের বড় উদ্যোক্তারা ন্যূনতম মজুরি নিয়ে টালবাহানা করছেন ও চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ দিয়ে কাজ করাচ্ছেন।’
আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, ‘বিদ্যমান সমস্যার সমাধান না করে ট্যানারি শিল্পটিকে বেপজার অধীনে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ লেবার কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম নাসিম বলেন, ‘ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের জন্য যা করা দরকার, তা না করে অন্য কিছু করা হচ্ছে। শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নার্সিং করা হচ্ছে না।’
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন মাহমুদ সংহতি জানিয়ে বলেন, ‘এ খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার প্রায় দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তা কার্যকর হয়নি। চামড়া শিল্পের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সত্তা রয়েছে, এটাকে বেপজায় নিয়ে গেলে কোনো লাভ হবে না। ট্যানারি শিল্প নিয়ে অপরিপক্ব খেলা চলছে, যেখানে শ্রমিকদের অস্থায়ী করে সংকট তৈরি করা হচ্ছে।’


